০২:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫

অভিযোগ পাওয়ার ১৩ দিনের মধ্যেই উদ্ধার করলো পুুলিশ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে যায় বিয়ানীবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়া হাবিবা জান্নাত তামান্না

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময়ঃ ০২:৪১:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ০ বার পড়া হয়েছে।

সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে তিন মাস পর হাবিবা জান্নাত তামান্না (২১) নামের এক তরুণীকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার ১৩ দিনের মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের দাসগ্রাম এলাকার একটি ভবন থেকে নিখোঁজ ওই তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজ হাবিবা জান্নাত তামান্না বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজানা গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের চতুর্থ মেয়ে। একই উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল বাছিতের বড় মেয়ে তাছলিমা জান্নাতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকার সুবাধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িতে যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর ১৪ মার্চ নিখোঁজ হন। রহস্যজনক কারণে ওই তরুণী নিখোঁজের পর থেকে ওই প্রবাসীর পরিবারের সন্ধানও স্থানীয় কেউই জানতো না। তাছাড়া নিখোঁজের পর থেকে স্বজন ও এলাকাবাসী বিভিন্নভাবে ওই প্রবাসীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা হাবিবার সন্ধান জানে না বলে জানান। স্থানীয় আকাখাজানা গ্রামের লোকজনও এ ব্যাপারে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পরবর্তীতে গত ২৬ জুন বিয়ানীবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিখোঁজ তরুণীর বড়বোন রাহেলা আক্তার। এরই সূত্র ধরে পুলিশ তাকে খুঁজতে শুরু করে এবং একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে এসআই আল আমিনসহ একদল পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া তরুণী হাবিবা জান্নাত তামান্না বলেন, ‘আমি পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছি। আমি নিজের মতো থাকতে চাই, পরিবারের কাছে ফিরতে চাইনা।’

হাবিবা জান্নাত তামান্নার বান্ধবী তাছলিমা জান্নাত জানান, ‘হাবিবা পারিবারিক নির্যাতনের কারণে বাড়ি ছেড়েছে। আমাদের সাথে থাকার ব্যাপারে আমরা তার (হাবিবা) কথায় কাউকে বিষয়টি জানাইনি। তাই সে এখন আমাদের সাথে থাকবে, তার পরিবারের কাছে ফিরে যাবে না।’

হাবিবার বড়বোন রাহেলা আক্তার জানান, ‘আমাদের আর কোন অভিযোগ নাই। বোন বেঁচে আছে, ভালো আছে- এটা জেনেই শান্তি লাগছে। মূলত নিখোঁজ বোনের অবস্থা জানতেই থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’ পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে তিনি আরও জানান, ‘সে যেহেতু একজন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে এবং আমাদের সাথে যেতে যাচ্ছে না; সে কারণে আমরাও চাই সে যেখানে থাকতে চায় থাকুক, ভালো থাকুক।’

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছবেদ আলী জানান, ‘থানায় অভিযোগ করার পর থেকে ওই তরুণীর খোঁজখবর নিচ্ছিলেন তারা। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিখোঁজ ওই তরুণী পারিবারিক কলহ জেরে নিজের ইচ্ছাতেই বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।’ তিনি জানান, ‘তরুণী একজন প্রাপ্তবয়স্কা, সেকারণে তার সম্মতি ও চাহিদানুসারে তাকে তার বান্ধবী তাছলিমা জান্নাত ও বান্ধবীর মা মোছা. ছাদিয়া বেগমের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

অভিযোগ পাওয়ার ১৩ দিনের মধ্যেই উদ্ধার করলো পুুলিশ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে যায় বিয়ানীবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়া হাবিবা জান্নাত তামান্না

আপডেট সময়ঃ ০২:৪১:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

সিলেটের বিয়ানীবাজার থেকে নিখোঁজ হওয়ার সাড়ে তিন মাস পর হাবিবা জান্নাত তামান্না (২১) নামের এক তরুণীকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার ১৩ দিনের মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৮টার দিকে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের দাসগ্রাম এলাকার একটি ভবন থেকে নিখোঁজ ওই তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজ হাবিবা জান্নাত তামান্না বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজানা গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের চতুর্থ মেয়ে। একই উপজেলার উত্তর আকাখাজানা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল বাছিতের বড় মেয়ে তাছলিমা জান্নাতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকার সুবাধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ওই বাড়িতে যান এবং সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর ১৪ মার্চ নিখোঁজ হন। রহস্যজনক কারণে ওই তরুণী নিখোঁজের পর থেকে ওই প্রবাসীর পরিবারের সন্ধানও স্থানীয় কেউই জানতো না। তাছাড়া নিখোঁজের পর থেকে স্বজন ও এলাকাবাসী বিভিন্নভাবে ওই প্রবাসীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা হাবিবার সন্ধান জানে না বলে জানান। স্থানীয় আকাখাজানা গ্রামের লোকজনও এ ব্যাপারে একাধিকবার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। পরবর্তীতে গত ২৬ জুন বিয়ানীবাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন নিখোঁজ তরুণীর বড়বোন রাহেলা আক্তার। এরই সূত্র ধরে পুলিশ তাকে খুঁজতে শুরু করে এবং একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে এসআই আল আমিনসহ একদল পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া তরুণী হাবিবা জান্নাত তামান্না বলেন, ‘আমি পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছি। আমি নিজের মতো থাকতে চাই, পরিবারের কাছে ফিরতে চাইনা।’

হাবিবা জান্নাত তামান্নার বান্ধবী তাছলিমা জান্নাত জানান, ‘হাবিবা পারিবারিক নির্যাতনের কারণে বাড়ি ছেড়েছে। আমাদের সাথে থাকার ব্যাপারে আমরা তার (হাবিবা) কথায় কাউকে বিষয়টি জানাইনি। তাই সে এখন আমাদের সাথে থাকবে, তার পরিবারের কাছে ফিরে যাবে না।’

হাবিবার বড়বোন রাহেলা আক্তার জানান, ‘আমাদের আর কোন অভিযোগ নাই। বোন বেঁচে আছে, ভালো আছে- এটা জেনেই শান্তি লাগছে। মূলত নিখোঁজ বোনের অবস্থা জানতেই থানায় অভিযোগ দিয়েছি।’ পারিবারিক নির্যাতনের অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে তিনি আরও জানান, ‘সে যেহেতু একজন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে এবং আমাদের সাথে যেতে যাচ্ছে না; সে কারণে আমরাও চাই সে যেখানে থাকতে চায় থাকুক, ভালো থাকুক।’

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছবেদ আলী জানান, ‘থানায় অভিযোগ করার পর থেকে ওই তরুণীর খোঁজখবর নিচ্ছিলেন তারা। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিখোঁজ ওই তরুণী পারিবারিক কলহ জেরে নিজের ইচ্ছাতেই বাড়ি থেকে পালিয়েছেন।’ তিনি জানান, ‘তরুণী একজন প্রাপ্তবয়স্কা, সেকারণে তার সম্মতি ও চাহিদানুসারে তাকে তার বান্ধবী তাছলিমা জান্নাত ও বান্ধবীর মা মোছা. ছাদিয়া বেগমের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন