একসময় ঢালিউড কাঁপানো নায়িকারা ছিলেন দর্শকের চোখের মণি। তাদের হাসি-কান্না, প্রেম-ভালোবাসা, নাচ-অভিনয় দিয়ে জয় করেছেন কোটি দর্শকের হৃদয়। নব্বইয়ের দশক থেকে একুশ শতকের শুরু পর্যন্ত এই নায়িকারা ছিলেন চলচ্চিত্রের সফলতার মূর্ত প্রতীক। কিন্তু সময়ের আবর্তনে কেউ হয়েছেন আড়াল, কেউ প্রবাসে গিয়েছেন, আবার কেউ স্থায়ীভাবে বিদায় নিয়েছেন অভিনয়জীবন থেকে।
আজকের প্রতিবেদনে থাকছে ঢাকাই সিনেমার সেইসব উজ্জ্বল তারকার গল্প, যারা একসময় ছিলেন আলোচনার শীর্ষে, এখন রয়েছেন রুপালি পর্দার বাইরে।
১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে ঢাকাই সিনেমায় যাত্রা শুরু করেছিলেন মৌসুমী। সালমান শাহর সঙ্গে তার রসায়ন আজও স্মরণীয়। একাধিক সুপারহিট সিনেমার এই তারকা পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি। তবে এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন এবং অভিনয়ে আর ফিরবেন না বলেই জানিয়েছেন তার স্বামী ওমর সানী। অভিনয় ছেড়ে দেওয়ার পেছনে রয়েছে একরাশ অভিমান, যা সানী নিজেই প্রকাশ করেছেনÑ ‘সে বলেছে, আমি ভুলে যেতে চাই আমি মৌসুমী ছিলাম।’ শেষবার তাকে দেখা গেছে ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সোনার চর’ ছবিতে।
শাবনাজ
‘চাঁদনী’ সিনেমা দিয়ে রুপালি পর্দায় অভিষেক, তারপর একের পর এক হিট ছবি। নব্বই দশকে শাবনাজ ছিলেন অন্যতম প্রধান মুখ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও হারিয়ে যান আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু থেকে। বর্তমানে অভিনয় থেকে সম্পূর্ণ দূরে আছেন এবং ফেরার সম্ভাবনাও নেই।
শাবনূর
যখনই নব্বইয়ের ঢালিউড স্মরণ করা হয়, শাবনূরের নাম না এলেই নয়। ‘চাঁদনী রাতে’ দিয়ে শুরু, আর সালমান শাহর সঙ্গে গড়া তারকা জুটি তাকে দিয়েছে অমর জনপ্রিয়তা। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন এই নায়িকা। ২০১৮ সালে ‘পাগল মানুষ’ সিনেমায় সর্বশেষ দেখা গেলেও ‘রঙ্গনা’ ও ‘এখনো ভালোবাসি’Ñ এই দুটি অসমাপ্ত সিনেমায় যুক্ত ছিলেন। তবে কিছুটা আশাবাদী তিনি, জানিয়েছেন দেশে ফিরে কাজ শেষ করার ইচ্ছা রয়েছে, যদিও সময় এখনও অনির্দিষ্ট।
পপি
প্রায় দুই দশকের সফল ক্যারিয়ারে তিনবার জাতীয় পুরস্কারজয়ী পপি ছিলেন ঢালিউডের অন্যতম ভরসার নাম। ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’সহ অনেক হিট ছবি উপহার দেওয়া এই নায়িকা একসময় হঠাৎ করেই আড়ালে চলে যান। পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি সংসারী হয়েছেন এবং রুপালি জগৎ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন স্থায়ীভাবে। বিয়ে ও মা হওয়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন রাখলেও পরে নিজেই তা প্রকাশ করেন।
পূর্ণিমা
পূর্ণিমা এখনও শোবিজে আছেন, তবে ভিন্নভাবে। নব্বইয়ের শেষদিকে যাত্রা শুরু করে ‘মেঘের পরে মেঘ’ থেকে শুরু করে অসংখ্য হিট সিনেমায় তিনি দর্শকের মন জয় করেছেন। এখন অভিনয়ে অনিয়মিত হলেও টেলিভিশন অনুষ্ঠান, রিয়েলিটি শো ও উপস্থাপনাতে নিয়মিত মুখ। যদিও তার ‘গাঙচিল’ ও ‘জ্যাম’ নামের দুটি সিনেমা এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
শিল্পী
‘নাগ নর্তকী’ দিয়ে ঢাকাই সিনেমায় পা রাখা শিল্পী পেয়েছিলেন তুমুল জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে সালমান শাহর বিপরীতে ‘প্রিয়জন’ ছবিটি তাকে এনে দেয় আলাদা পরিচিতি। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে তিনি একপ্রকার বিদায় নেন চলচ্চিত্র থেকে। মাঝে নাটক ও উপস্থাপনায় দেখা গেলেও এখন তিনি শোবিজেও অনিয়মিত। শুধু বিশেষ আয়োজনে তার উপস্থিতি চোখে পড়ে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাই সিনেমা যেমন বদলেছে, তেমনি বদলে গিয়েছে তারকারাও। কেউ ভুলে যেতে চেয়েছেন নিজেদের পরিচয়, কেউ আবার স্মৃতির পাতায় আজও জীবন্ত।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
© 2024 Sylhet21 All Rights Reserved. | Developed Success Life IT