০৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

ইসলামী শিক্ষা প্রসারে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা

মিসবাহ উদ্দিন মাদানী
  • আপডেট সময়ঃ ১২:১২:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / ১৮২ বার পড়া হয়েছে।

আধুনিক বিশ্বে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের অনন্য ভূমিকা পালন করে আসছে তার অন্যতম মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ইসলাম ও মুসলমানদের সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়াসহ পৃথিবীর বহু দেশের শিক্ষার্থীদের ইসলামী জ্ঞানার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে। বিশেষত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণে অমুসলিম দেশের সেসব মুসলিম সংখ্যালঘু ছাত্ররা উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে নিজ দেশে যাদের পক্ষে তা অর্জন করা সম্ভব ছিল না।

মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৭০টি দেশের ছাত্ররা পড়াশোনা করে যার ৯৫ শতাংশ সম্পূর্ণ বৃত্তি নিয়ে লেখাপড়া করে। বর্তমানে অধ্যয়নরত ছাত্রের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৭৩ জন। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই ইসলামী বিদ্যাপীঠ থেকে অধ্যয়ন শেষ করে দেশে ফিরে গিয়েছেন ৯৭ হাজার ৫৭৮ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ৩২ জন বাংলাদেশি। বর্তমানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্রসংখ্যা ৪৪৮ জন।

মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বহুমুখী দক্ষ ও নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলেছে। যাঁরা সমাজে দাওয়াত ইলাল্লাহর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বিখ্যাত শিক্ষার্থী হলেন—মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মামুন আবদুল কাইয়ুম, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মুহাম্মাদ শহীম আলী সাঈদ, মালয়েশিয়ার যুলকিফিল বিন মুহাম্মাদ, সেনেগালের আফ্রিকান ইসলামিক স্টাডিজ কলেজের ডিন মুহাম্মাদ আহমদ লুহ।

বাংলাদেশেও মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক গ্র্যাজুয়েট নীরবে দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আরবি ভাষায় পাঠদান ও গবেষণাধর্মী বিষয়ে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন। তাঁদের কয়েকজন হলেন ড. হাফেজ এ বি এম হিজবুল্লাহ, মরহুম রফিকুল্লাহ মাদানী (রহ.), ড. মোস্তফা কামিল মাদানী, ড. শাফী উদ্দীন মাদানী, ড. সাইফুল্লাহ মাদানী, ড. মনজুরে ইলাহী, ড. আবু বকর যাকারিয়া, নূরুল আমীন মাদানী, আফীফ ফুরকান মাদানী, এনামুল হক মাদানী, মোস্তফা সাইফুদ্দীন মাদানী, মহিউদ্দীন ফারুকী প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা ইসলামী শিক্ষা, আরবি ভাষা পাঠদান, দাওয়াত, সেবা ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রম পরিচালনায় উম্মাহর অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়েছেন। প্রায় ১৭০টি দেশের মুসলিম ছাত্ররা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিজ নিজ দেশে ফিরে যায় ইসলামী শিক্ষা ও দাওয়াতের মিশন নিয়ে। এ জন্য মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়, ‘যার (মানচিত্রে) কখনো সূর্য ডোবে না।’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ লক্ষ্য, বিস্তৃত বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং পবিত্রতা ও মর্যাদায় দ্বিতীয়তম স্থান, হিজরতের নগরী মদিনায় এর অবস্থান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য তাঁকে পরিণত করেছে ইসলামী শিক্ষার এক দীপ্তিমান বাতিঘরে। যার উদাহরণ পৃথিবীতে বিরল।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন