চট্টগ্রামে দুজনের শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য প্রশাসন। সোমবার (৭ জুলাই) রাতে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার এপিক হেলথ কেয়ারে নমুনা পরীক্ষায় জিকা ভাইরাস ‘পজিটিভ’ আসে। তবে এটি চূড়ান্ত ঘোষণা নয় চূড়ান্ত নিশ্চয়তার দায়িত্ব এখন আইইডিসিআরের হাতে।
চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বেসরকারি পরীক্ষাগারে যেসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তা একটি কম্বাইন্ড কিটে যেটি ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকার মতো ভাইরাস শনাক্তে ব্যবহৃত হয়। এ কারণে ফলাফলের সুনিশ্চিত ব্যাখ্যা দেওয়ার আগে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ইতোমধ্যে ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিডিসি বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আইইডিসিআরের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত সরকারি পর্যায় থেকে চূড়ান্তভাবে জিকা শনাক্তের ঘোষণা দেওয়া হবে না। সংক্রমণের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট রোগীর তথ্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখন সেই নমুনাগুলো পুনরায় পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্ত ফলাফল দেবে আইইডিসিআর। তবে প্রয়োজন মনে করলে তারা আবারও নিজেরা নতুন করে পরীক্ষাও করতে পারেন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, আক্রান্ত দুজনই চল্লিশোর্ধ্ব একজন পুরুষ, একজন নারী। তাঁদের শরীরে জ্বর, র্যাশ, শরীর ব্যথা, হাত-পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় এবং কম্বাইন্ড কিটে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে।চট্টগ্রামের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ওয়ালিউল্লাহ ও নুরুন্নবী তাঁদের ব্যক্তিগত চেম্বার থেকে রোগী দুজনকে এপিক হেলথ কেয়ারে পাঠান। সেখানে পরীক্ষার পর রিপোর্ট ‘জিকা পজিটিভ’ আসে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, জিকা ভাইরাস সাধারণত ডেঙ্গুর মতো প্রাণঘাতী নয়। তবে গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এই ভাইরাস অনাগত শিশুর বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, চলমান বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রামে মশাবাহিত অন্যান্য রোগও বেড়েছে। জুলাই মাসের শুরু থেকেই জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে থাকে, যার মধ্যে ৮৩ জন রোগী ইতোমধ্যে শনাক্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে ৩০ জন চিকুনগুনিয়া রোগীর উপস্থিতিও নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন জাহাঙ্গীর আলম।চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এই তিনটি ভাইরাসই এডিস মশার কামড়ে ছড়ায়। তাই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা এবং কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে আইইডিসিআরের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করেই নিশ্চিত হওয়া যাবে চট্টগ্রামে জিকা ভাইরাসের প্রকৃত অবস্থা।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
© 2024 Sylhet21 All Rights Reserved. | Developed Success Life IT