তমব্রু সীমান্তের ওপারে আবারও গোলাগুলির শব্দ, সতর্ক বিজিবি

- আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্ত এলাকার ওপারে মায়ানমার অংশে গোলাগুলির শব্দ হচ্ছে। থেমে থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছে সীমান্তের এপাশের বাসিন্দারা। এতে সীমান্তবর্তী পাড়া-গ্রামগুলোতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওপারের ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় সতর্ক রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং সীমান্তে টহল জোরদার করেছে।
এ ছাড়া আশাতলী ৪৬ নম্বর সীমান্ত পিলার এলাকায় আজ সোমবার সকাল ৯টায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে একটি হাতি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তুমব্রু এলাকার নারিকেলবাগিচা সংলগ্ন স্থানে ওপারে মায়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দুটি ক্যাম্প রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই এলাকাতেই হঠাৎ করে বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মাহামুদুল হাসান বলেন, ২৬ ও ২৭ জুলাইয়ের পর গতকাল রাতে আবারও গুলির আওয়াজ পাওয়া গেল। রাত ১০টার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে অনবরত গুলির শব্দ শোনা যায়। ঠিক কী হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। তমব্রু ইউপি সদস্য সফিক বলেন, ‘রবিবার রাত ১০টা থেকে সীমান্তের ওপারে গুলির আওয়াজ পাওয়া গেছে। অনেকক্ষণ যাবৎ অনবরত গুলির শব্দ ভেসে আসছে এপারের গ্রামগুলোতে। তবে সেখানে কী হচ্ছে তা আমরা জানি না, হয়তো মায়ানমার জান্তার সেনা বা অন্য রোহিঙ্গা বিদ্রোহ গ্রুপগুলোর মধ্যে কিছু একটা গণ্ডগোল হচ্ছে তা বোঝা যাচ্ছে।’
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সকালে স্থলমাইন বিস্ফোরণের বিকট শব্দের কেঁপে ওঠে তমব্রু সীমান্ত এলাকা। পরে স্থানীয়রা সীমান্তের কাছাকাছি গিয়ে দেখতে পায় একটি বন্য হাতি বিস্ফোরণ স্থানে ক্ষতবিক্ষত হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে।
সীমান্তে ফের গোলাগুলি ও ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে হাতি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী জানান, সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনাগুলো মায়ানমারের অভ্যন্তরে ঘটছে।
এ বিষয়ে প্রশাসন কাজ করছে। প্রায় সময় মাইকিং করে সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামের লোকজনকে নিরাপদ থাকতে সর্তক করা হচ্ছে।
বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল এস এম খায়রুল আলম বলেন, সীমান্তের ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পিলার সংলগ্ন শূন্য রেখা থেকে ৩০০ থেকে ৩৩০ মিটার দূরে মিয়ানমারের ভেতরে এই গোলাগুলি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আরকান আর্মির সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরসা বা আরএসওর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশের ভেতরে কোনো গুলি প্রবেশ করেনি এবং এটি সম্পূর্ণ মায়ানমারের অভ্যন্তরের ঘটনা। তবে বিজিবি কঠোর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
২০২৩ সালের অক্টোবরে মায়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তারা মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার রাখাইন অংশের ২৭১ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।