১২:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ।

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ১২:৫২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। মূলত প্রকল্পে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে ঋণদাতা চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থছাড় স্থগিত রেখেছে। আর আর্থিক সঙ্কটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম দ্রুতগতির উড়াল সড়ক। এ পথের বিমানবন্দর-কারওয়ান বাজার অংশ চালু হলেও মালিবাগ-কুতুবখালী অংশের নির্মাণ কাজ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে ঠিকাদাররা এ সময়ে কারওয়ান বাজার-মালিবাগ অংশে কিছু কাজ করতে পেরেছেন। তবে মালিবাগ-কুতুবখালী অংশে কাজ শুরু হলেও তা এগিয়ে নেয়া যায়নি। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ অংশের কাজ শুরু করতে পারবে আশাবাদী। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। প্রকল্পটি ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের সড়কপথের ধারণক্ষমতা বাড়াবে। পাশাপাশি ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হলে ঢাকা ইপিজেড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে। ফলে ঢাকার যানজট নিরসনের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে। বিমানবন্দর-কমলাপুর রেলপথ বরাবর এর গতিপথের একটি বড় অংশ পড়েছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল করিডোরের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। আর এ মূল করিডোরে প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য ৩১টি র‌্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫টি র‌্যাম্প ওঠার জন্য আর নামার ১৬টি র‌্যাম্প বা পথ। র‌্যাম্পগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার।

সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব পদ্ধতিতে (পিপিপি)ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন ও পরবর্তী সময়ে উড়ালসড়কটি পরিচালনার জন্য ‘ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেড’ গঠন করা হয়। শুরুতে থাইল্যান্ডভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এককভাবে এর মালিক ছিল। পরে ইতাল-থাই আর্থিক সংকটে পড়ে চীনের শ্যাংডং সিএসআই ও সিনোহাইড্রো করপোরেশনের কাছে ৪৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু বিগত ২০২৩ সালের শেষের দিকে ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ নিয়ে তিন ঠিকাদারদের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। বিষয়টি বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং শেষ পর্যায়ে কোম্পানির মালিকানা থেকে ইতাল-থাই বাদ পড়ে। আর ইতাল-থাই বাদ পড়ে যাওয়ায় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ কিছু পদে পরিবর্তনের কাজ চলমান। কোম্পানি পুনর্গঠনের কাজ শেষ না হওয়ায় চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থছাড় আটকে রেখেছে। যে কারণে মালিবাগ-কুতুবখালী অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার জানান, নির্মাণকাজ সচল রাখতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যাটি মূলত ঠিকাদারদের মধ্যকার জটিলতা থেকে শুরু। যে কারণে এক্সিম ব্যাংক থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো টাকা ছাড় হয়নি। এর মধ্যে সামান্য যা কাজ হয়েছে, তা নিজেদের ইকুইটি দিয়ে করেছে ঠিকাদার। এরই মধ্যে অনেকগুলো কাজ শুরু হয়েছে। আর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। মালিকানা জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে পরিবর্তন হয়েছে। এমডি পরিবর্তন হয়েছে। সবকিছু শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন কাজ শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আশা করা যায় দ্রুত নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ।

আপডেট সময়ঃ ১২:৫২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। মূলত প্রকল্পে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে ঋণদাতা চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থছাড় স্থগিত রেখেছে। আর আর্থিক সঙ্কটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অথচ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম দ্রুতগতির উড়াল সড়ক। এ পথের বিমানবন্দর-কারওয়ান বাজার অংশ চালু হলেও মালিবাগ-কুতুবখালী অংশের নির্মাণ কাজ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ নিজস্ব তহবিল থেকে ঠিকাদাররা এ সময়ে কারওয়ান বাজার-মালিবাগ অংশে কিছু কাজ করতে পেরেছেন। তবে মালিবাগ-কুতুবখালী অংশে কাজ শুরু হলেও তা এগিয়ে নেয়া যায়নি। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ অংশের কাজ শুরু করতে পারবে আশাবাদী। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। প্রকল্পটি ঢাকা শহরের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের সড়কপথের ধারণক্ষমতা বাড়াবে। পাশাপাশি ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হলে ঢাকা ইপিজেড ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের যোগাযোগ সহজ হবে। ফলে ঢাকার যানজট নিরসনের পাশাপাশি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হচ্ছে। বিমানবন্দর-কমলাপুর রেলপথ বরাবর এর গতিপথের একটি বড় অংশ পড়েছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল করিডোরের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। আর এ মূল করিডোরে প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য ৩১টি র‌্যাম্প তৈরি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫টি র‌্যাম্প ওঠার জন্য আর নামার ১৬টি র‌্যাম্প বা পথ। র‌্যাম্পগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার।

সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব পদ্ধতিতে (পিপিপি)ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন ও পরবর্তী সময়ে উড়ালসড়কটি পরিচালনার জন্য ‘ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কোম্পানি লিমিটেড’ গঠন করা হয়। শুরুতে থাইল্যান্ডভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এককভাবে এর মালিক ছিল। পরে ইতাল-থাই আর্থিক সংকটে পড়ে চীনের শ্যাংডং সিএসআই ও সিনোহাইড্রো করপোরেশনের কাছে ৪৯ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেয়। বিনিময়ে প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু বিগত ২০২৩ সালের শেষের দিকে ব্যাংক ঋণের সুদ পরিশোধ নিয়ে তিন ঠিকাদারদের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। বিষয়টি বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং শেষ পর্যায়ে কোম্পানির মালিকানা থেকে ইতাল-থাই বাদ পড়ে। আর ইতাল-থাই বাদ পড়ে যাওয়ায় কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদসহ কিছু পদে পরিবর্তনের কাজ চলমান। কোম্পানি পুনর্গঠনের কাজ শেষ না হওয়ায় চীনের এক্সিম ব্যাংক অর্থছাড় আটকে রেখেছে। যে কারণে মালিবাগ-কুতুবখালী অংশের কাজ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার জানান, নির্মাণকাজ সচল রাখতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ সমস্যাটি মূলত ঠিকাদারদের মধ্যকার জটিলতা থেকে শুরু। যে কারণে এক্সিম ব্যাংক থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো টাকা ছাড় হয়নি। এর মধ্যে সামান্য যা কাজ হয়েছে, তা নিজেদের ইকুইটি দিয়ে করেছে ঠিকাদার। এরই মধ্যে অনেকগুলো কাজ শুরু হয়েছে। আর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন এসেছে। মালিকানা জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে পরিবর্তন হয়েছে। এমডি পরিবর্তন হয়েছে। সবকিছু শেষ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখন কাজ শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। আমরা আশা করা যায় দ্রুত নির্মাণকাজ পুনরায় শুরু হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন