১০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
সংবাদ শিরোনামঃ
দূর্নীতি ঠেকাতে পারলেই দেশ বদলে যাবে- বিয়ানীবাজারে ডা. শফিকুর রহমান

সরওয়ার খান:
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৪৭:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
- / ৮ বার পড়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা বিভেদের বাংলাদেশ চাই না। মানবিক ও সাম্যের বাংলাদেশ চাই। সেই বাংলাদেশ গড়তে দেশবাসীর ভালবাসা চাই, সহযোগিতা চাই। তাদের পাশে চাই। আমরা কথা দিচ্ছি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় এলে যুবকদের দেশ গড়ার কারিগর বানাবো। দক্ষ মানবশক্তি তৈরী করবো। তিনি বলেন, জনগনকে ঠকিয়ে কোন রাষ্ট্রনায়ক সফল হতে পারেনি। অন্যায়, জুলুম ও দূর্নীতি করলে চৌদ্দগুষ্টিসহ পালাতে হয়। জামায়াতে ইসলামীর ১১জন নেতা হাসতে-হাসতে ফাসির কাষ্টে ঝুলেছেন। কিন্তু কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাননি। তিনি বলেন, আমরা স্বচ্ছতায় আবৃত ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।
জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরোও বলেন, আগামী নির্বাচন দেরীতে হোক আমরা সেটা চাইনা। তবে সেই নির্বাচন হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ। বিগত দিনের মত যেনতেন কোন নির্বাচন জামায়াতে ইসলামী মানবেনা। আমরা আর কাউকে আখের গোছাতে দিবোনা। জনগণের সম্পদে কাউকে হাত দিতে দেয়া হবেনা। অনেক নির্যাতন-নিপীড়নের পরও আমরা ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে ঐক্যের ডাক দিয়েছিলাম। কারণ আমরা দেশে স্থিতিশীলতা চাই। পতিত সরকারের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন গদি ছেড়ে দিলে দেশে একদিনে ৫ লক্ষ লোক মারা যাবে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর ধৈর্যের কারণে কোথাও সে ধরনের পরিবেশ দেখিনি। আমরা ভিন্ন ধর্মের লোকদের নিরাপত্তা দিয়েছি, এখনো দিচ্ছি। অথচ বিগত সরকারের সময়ে ভিন্নধর্মের লোকজন সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের মাটির নীচে-উপরে আল্লাহতায়ালা সম্পদ দিয়েছেন। এত সম্পদ থাকার পরেও আমরা কেন স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারিনি। আমাদের কেবল চারিত্রিক সম্পদের অভাব। এই কারণেও স্বপ্নের দেশ গড়া সম্ভব হয়নি। গত ৫২ বছরেও জনগণের দিকে কেউ ভালো করে ফিরে থাকায়নি। নিজেদের আখের গোছানো আর দলের শক্তি বৃদ্ধিতে মনোযোগী ছিলেন তারা। আগামীতে সেইদিন যাতে না আসে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি।
বুধবার বিকেলে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিয়ানীবাজার উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত জনশক্তি ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ফয়জুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী আবুল কাশেম ও পৌর আমীর কাজী জমির হোসাইনের পরিচালনায় সুধী সমাবেশে বিশেষ অথিতির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, মহানগর আমীর ফখরুল ইসলাম।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর জিন্নুর আহমদ চৌধুরী, পৌর শাখার ভারপ্রাপ্ত আমীর রেহান আহমদ রায়হান, বিয়ানীবাজারের নায়েবে আমীর মোস্তফা উদ্দিন ও আবুল খায়ের, সহকারি সেক্রেটারী রুকন উদ্দিন, আব্দুল হামিদ, উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি আহবাব হোসেন মুরাদ প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, ৫ আগস্টের পর একটি নতুন সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। মানুষের কল্যাণে জামায়াত কর্মীদের নিবেদিত হতে হবে। আমরা একটি দূর্র্নীতিমুক্ত, আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমাদের এই বাংলাদেশ হবে রাহাজানিমুক্ত। আমরা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ গড়বো।
সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, এলাকার উন্নয়নে কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তাঘাটসহ এই আসনের মানুষের মৌলিক উন্নয়নে আমি প্রশাসনে কথা বলছি। অচিরেই এর সুফল পাওয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জকে নিয়ে অনেকে উন্নয়নের গালগল্প শুনিয়েছেন। আমরা গল্প শুনাতে চাইনা। মানুষের মৌলিক দাবী পূরণের জন্য আমি রাজনীতি করছি। এ থেকে পিছু হটবোনা। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের এখন থেকে দাড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থীদের পক্ষে মাঠে নামার নির্দেশনা দেন। সেলিম উদ্দিন বলেন, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের ঘরে ঘরে আমার সালাম পৌঁছে দিবেন। দূর্নীতমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে দাড়িপাল্লায় ভোট চাওয়ার তাগিদ দেন।
জামায়াতে ইসলামীর জনশক্তি ও সুধী সমবেশে বিপুল সংখ্যক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। দুপুরের পর থেকে খন্ড খন্ড মিছিল সভাস্থলে পৌঁছাতে থাকে।
ট্যাগসঃ