১১:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

নিখোঁজের পরদিন অবৈধ বালুর পয়েন্টে মিলল ২ শিশুর মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০৬:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে।

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি অবৈধ বালুর পয়েন্টের খনন স্থান থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস। বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে শিশু দুটির বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি অবৈধ বালুর পয়েন্টের খনন স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশুরা হলেন মারুফ মিয়া (৬) এবং আব্দুর রহমান (৭)। মারুফ মিয়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙি পাইকান এলাকার জাকিরুল ইসলামের ছেলে এবং আব্দুর রহমান একই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। স্থানীয়দের দাবি শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মারুফ মিয়া ও আব্দুর রহমান তারা দুজনেই নগরবন্দ বড়াইবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সকালে তারা দুই বন্ধু মিলে খেলতে বের হয়। এরপর আর তারা বাড়িতে ফেরেনি।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর বুধবার দুপুর ২টার দিকে আজহারুলের বালুর পয়েন্টটিতে গিয়ে নেমে খোঁজ করতে নামলে এ সময় মারুফ মিয়ার মরদেহ পাওয়া যায়। তার গলায় বাঁধানো একটি রশি এবং একটি বোতল পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লোকজন আব্দুর রহমান নামে আরো এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। প্রত্যক্ষদর্শী আখতারুজ্জামান মুকুল বলেন, ‘আজ সকালে (মঙ্গলবার) ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আশপাশের পুকুরগুলোতে খোঁজাখুঁজি করে।

আমি বেলা দেড়টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই, আমার সন্দেহ হয় বালুর পয়েন্টটিতে শিশুগুলো পড়তে পারে। আমি বালুর পয়েন্টে নামতে গেলে বালুর পয়েন্টের মালিক আজহারুলের ভাগিনা মনু মিয়া আমাকে বাধা দেয়। এ সময় আমাকে গালাগাল করে। পরে আমি জোর করে গর্তে নামতেই একটি শিশুর হাত আমার হাতে লাগে। পরে আমি শিশুটির মরদেহটি ওপরে তুলে দেখি শিশু মারুফের মরদেহ এটি।

শিশুটির বুকের সবকটি হাড় ভাঙা ছিল। তার গলায় রশি ও বোতল পাওয়া যায়। পরে পাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আব্দুর রহমান নামে আরেক শিশুর লাশ সেখান থেকে উদ্ধার করে। আমাদের ধারণা শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দাবি সঠিক তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করা হোক।’ শিশু মারুফের মা রাশেদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হামার ছওয়াক ওমরা মারি ফেলাইছে। হামরা তো কারো ক্ষতি করি নাই। হামার ছওয়াক কেনে মারিল। হামরা বিচার চাই। আর কিছু চাই না।’

গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিসের সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (স্টেশন মাস্টার) আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বালু তোলা গর্তে মুকুল নামে এক লোক নেমে একটা বাচ্চা উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আমাদের ডুবুরি দল সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম করে আরেকটি শিশুকে উদ্ধার করি।’

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, ‘পাইকান ডাঙিপাড়া থেকে দুইটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহ থাকায় লাশ ময়নাতদন্তর জন্য মর্গে পাঠানো হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

নিখোঁজের পরদিন অবৈধ বালুর পয়েন্টে মিলল ২ শিশুর মরদেহ

আপডেট সময়ঃ ০৯:০৬:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অগাস্ট ২০২৫

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় একটি অবৈধ বালুর পয়েন্টের খনন স্থান থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস। বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে শিশু দুটির বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি অবৈধ বালুর পয়েন্টের খনন স্থান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।

শিশুরা হলেন মারুফ মিয়া (৬) এবং আব্দুর রহমান (৭)। মারুফ মিয়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের ডাঙি পাইকান এলাকার জাকিরুল ইসলামের ছেলে এবং আব্দুর রহমান একই এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। স্থানীয়দের দাবি শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মারুফ মিয়া ও আব্দুর রহমান তারা দুজনেই নগরবন্দ বড়াইবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সকালে তারা দুই বন্ধু মিলে খেলতে বের হয়। এরপর আর তারা বাড়িতে ফেরেনি।

অনেক খোঁজাখুঁজির পর বুধবার দুপুর ২টার দিকে আজহারুলের বালুর পয়েন্টটিতে গিয়ে নেমে খোঁজ করতে নামলে এ সময় মারুফ মিয়ার মরদেহ পাওয়া যায়। তার গলায় বাঁধানো একটি রশি এবং একটি বোতল পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় লোকজন গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের লোকজন আব্দুর রহমান নামে আরো এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। প্রত্যক্ষদর্শী আখতারুজ্জামান মুকুল বলেন, ‘আজ সকালে (মঙ্গলবার) ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আশপাশের পুকুরগুলোতে খোঁজাখুঁজি করে।

আমি বেলা দেড়টার দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই, আমার সন্দেহ হয় বালুর পয়েন্টটিতে শিশুগুলো পড়তে পারে। আমি বালুর পয়েন্টে নামতে গেলে বালুর পয়েন্টের মালিক আজহারুলের ভাগিনা মনু মিয়া আমাকে বাধা দেয়। এ সময় আমাকে গালাগাল করে। পরে আমি জোর করে গর্তে নামতেই একটি শিশুর হাত আমার হাতে লাগে। পরে আমি শিশুটির মরদেহটি ওপরে তুলে দেখি শিশু মারুফের মরদেহ এটি।

শিশুটির বুকের সবকটি হাড় ভাঙা ছিল। তার গলায় রশি ও বোতল পাওয়া যায়। পরে পাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আব্দুর রহমান নামে আরেক শিশুর লাশ সেখান থেকে উদ্ধার করে। আমাদের ধারণা শিশু দুটিকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দাবি সঠিক তদন্ত করে এ ঘটনার সত্যতা উদঘাটন করা হোক।’ শিশু মারুফের মা রাশেদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘হামার ছওয়াক ওমরা মারি ফেলাইছে। হামরা তো কারো ক্ষতি করি নাই। হামার ছওয়াক কেনে মারিল। হামরা বিচার চাই। আর কিছু চাই না।’

গঙ্গাচড়া ফায়ার সার্ভিসের সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (স্টেশন মাস্টার) আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বালু তোলা গর্তে মুকুল নামে এক লোক নেমে একটা বাচ্চা উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আমাদের ডুবুরি দল সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম করে আরেকটি শিশুকে উদ্ধার করি।’

গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান বলেন, ‘পাইকান ডাঙিপাড়া থেকে দুইটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্দেহ থাকায় লাশ ময়নাতদন্তর জন্য মর্গে পাঠানো হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন