পিতার মৃ ত্যু র ১৫ দিনের মাথায় ছেলেও চলে গেলেন

- আপডেট সময়ঃ ০৯:৩৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
- / ১৭ বার পড়া হয়েছে।

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক নির্মল চন্দ্র ধর রুনু ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ১৬ মে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের পুরকায়স্থপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। আজ শুক্রবার ছিল মৃতের আত্মার শান্তি কামনায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আত্মীয় স্বজন অনেকেই এসেছেন বাড়িতে। শুক্রবার অনুষ্ঠানের সকল আয়োজনও সমাপ্ত করেছেন রুনু ধরের ছোট ছেলে পরিতোষ ধর পাপ্পু। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দিবাগত রাতে হঠাৎ করে আকস্মিক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন পরিতুষ ধর পাপ্পুও।
প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন পাপ্পু। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ের তিনি। পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে সিলেট জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপালে নিয়ে গেলে রাত ১টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক পাপ্পুকে মৃত ঘোষণা করেন। পিতার মৃত্যুর ১৫ দিনের মাথায় পুত্রের অকাল মৃত্যুতে পরিবারসহ পুরো গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
স্থানীয়রা জানান, পুরকায়স্থপাড়া গ্রামের শিক্ষক রুনু ধর ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। বেশ সুনামের সাথে শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসর নেন তিনি। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন নিজের ৫ সন্তানকে। বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত ছিলেন ছোট ছেলে পরিতোষ ধর পাপ্পু। পিতার অসুস্থতার খবরে ছুটে আসেন সিলেটে। রুনু ধরের শারীরিকক অবস্থার অবনতি হলে গত ১৩ মে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে দুই দিন চিকিৎসারত অবস্থায় ১৬ মে ৬৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৭ মে পরিতোষ ধর পাপ্পু পিতার লাশ নিয়ে আসেন সাবেক কর্মক্ষেত্র গেয়ালাবাজার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাবেক শিক্ষার্থীও সহকর্মীরা। রুনু ধরের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকাহত হন সহকর্মীরাও। পরে নিজ বাড়িতে শিক্ষক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ রুনু ধরের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। প্রবীণ লেখক ও শিক্ষকের মৃত্যুতে মরনোত্তর সম্মাননা দেন সাবেক, বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সমাজ এবং সামাজিক একাধিক সংগঠন।
বুধবারও এমন একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পরিতোষ ধর পাপ্পু পিতার সম্মাননা বয়ে আনেন বাড়িতে। শ্রাদ্ধানুষ্ঠান শেষে করে পিতার আত্মার শান্তি কামনায় শুক্রবার বাড়িতে ছিল ভোগরাগ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠান আর হলো না। অনুষ্ঠানের দিনেই নিজের দেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে পরিতোষের। মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে একই পরিবারের দুই সদস্যের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাকরুদ্ধ পরিবারের সদস্যরাও। আত্মীয়স্বজনরাও শেষবারের মতো এক পলক দেখে নিলেন তাকে।