০২:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

বিদ্যুৎহীন পাম্পে পানিবন্দি শহরবাসী, থামছে না তার চুরির মহোৎসব

মোঃ মশিউর রহমান রাজশাহী:
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০৫:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে।

রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পাম্প ঘরগুলোতে বৈদ্যুতিক তার চুরির হিড়িক দেখা দিয়েছে। পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় হঠাৎই থেমে যাচ্ছে পানি সরবরাহ, ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।

রাজশাহী সিটি এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ১২৩টি পাম্প ঘর রয়েছে। এসব পাম্প থেকে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে শহরবাসীর কাছে সরবরাহ করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিতভাবে এসব পাম্প ঘরে তার চুরির ঘটনা ঘটছে। ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, আগে বছরে দু-একটি পাম্পঘর থেকে চুরি হলেও এখন প্রায় প্রতি সপ্তাহেই পাম্পঘর থেকে সাবমারসিবল তার ও টেন-আরএম তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে চোরচক্র।

সবশেষ সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানকে চিঠি দিয়ে ১২৩টি পাম্পের তালিকাসহ রাত্রীকালীন পুলিশ টহল বাড়ানোর অনুরোধ জানায় ওয়াসা। কিন্তু সেই রাতেই নগরের কাজলা এবং খোজাপুর গোরস্থান সংলগ্ন পাম্প ঘর থেকে আবারও তার চুরি হয়।

এর আগে ১১ অক্টোবর বুধপাড়া বাইপাস পাম্পঘর, ১৬ অক্টোবর দায়রাপাক মোড়ের পাম্পঘর, ১৯ অক্টোবর খলিল সরকারের মোড় পাম্পঘর এবং আরও কয়েকটি স্থানে তার চুরি হয়। প্রথম চুরির ঘটনা ঘটে রাজশাহী শারীরিক শিক্ষা কলেজের পাম্প ঘরে।

চুরির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত খলিল সরকারের মোড় পাম্পের অপারেটর মো. চাঁদ বলেন, “রোববার রাতে তার চুরি হওয়ার পর থেকে পাম্প বন্ধ ছিল। নতুন তার না লাগানো পর্যন্ত পানি সরবরাহ বন্ধ থাকে।”

খোজাপুর গোরস্থানের পাম্পে নতুন তার লাগাতে কাজ করছিলেন মিস্ত্রি জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, “দামি এই তারগুলো মাদকাসক্তরা কেটে নিয়ে কেজি দরে বিক্রি করে থাকে বলে ধারণা। এখন চুরি প্রায় নিয়মিত বিষয় হয়ে গেছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা সামসুল ইসলাম বলেন, “রাতে তার চুরির পর থেকেই পানি বন্ধ। এখন দুপুর গড়িয়ে গেল, পাম্প চালু হয়নি। পুরো এলাকার মানুষ কষ্টে আছে। পাম্পঘরে পাহারা না থাকলে এভাবে চুরি হবেই।”

ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) তৌহিদুর রহমান বলেন, “রাতে পাম্প চলে না, অপারেটর থাকেন না। আমাদের কোনো নৈশপ্রহরীও নেই। তাই চোরদের সহজ সুযোগ তৈরি হচ্ছে। আমরা পুলিশকে লিখিতভাবে জানিয়েছি ও থানায় অভিযোগ করেছি।”

আরএমপি মুখপাত্র গাজিউর রহমান বলেন, “পাম্পগুলো বেশিরভাগ সময় অরক্ষিত থাকে। এগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব ওয়াসারও রয়েছে। আমরা অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। ওয়াসা যে তালিকা দিয়েছে তার ভিত্তিতে রাত্রীকালীন টহল জোরদার করা হচ্ছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন