বিয়ানীবাজারবাসীর বড় ক্ষতি করে গেলেন সিলেটের ডিসি

- আপডেট সময়ঃ ০৮:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
- / ৬১ বার পড়া হয়েছে।

তীব্র বিতর্কের মুখে সিলেট ছাড়ছেন বিদায়ী ডিসি মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তাকে নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই সিলেট জেলাজুড়ে। সাদা পাথর কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে তাকে ওএসডি করা হয়েছে। তবে বিদায়ের আগে বিয়ানীবাজারবাসীর বড় ক্ষতি করে গেলেন তিনি। তার বিদায়ে বিয়ানীবাজার উপজেলাজুড়ে বইছে আনন্দের ঢেউ।
উপজেলার বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা হয়ে ওঠেন তিনি।
সিলেট-বিয়ানীবাজার-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’ আগামী ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রকল্পটির ১০ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উদ্যোগে গৃহিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ হাজার ৮৮৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বাকি ১ হাজার ৩৭০কোটি ২৫ লাখ টাকা সরকার কর্তৃক দেয়ার কথা।
একটি সূত্র জানায়, গত ২৯ এপ্রিল সিলেট জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রকল্পটির ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সেখানে যুক্ত চার লেন সেতু ও অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, সীমান্তবর্তী দুই উপজেলার অল্প কিছু যাত্রী পরিবহন ছাড়া এ পথে বড় ধরনের যান চলাচল নেই। তাই আপাতত চার লেন সড়ক নির্মাণ জরুরি নয় এবং এতে সরকারি অর্থের অপচয় ঘটতে পারে। এই মতামত জেলা প্রশাসক গত ৮ মে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে চার উপজেলার মানুষ ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন। স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে এ প্রকল্পের কাজ দ্রæত শেষ করতে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ এবং বিয়ানীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিদ্ধান্ত নেয় একনেক। ওই বৈঠকে ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়ককে চারলেনের আধুনিক মহাসড়কে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রকল্পটির বিলম্বের প্রধান কারণ হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতাকে দায়ী করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের দাবি, জেলা প্রশাসকের সদিচ্ছা থাকলে ভূমি অধিগ্রহণের সমস্যার দ্রæত সমাধান সম্ভব। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বিয়ানীবাজার তথা পূর্ব সিলেটের আমুল পরিবর্তন হতো।
সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর তিনি শিকপুর-বহরগ্রাম সেতুর জমি অধি:গ্রহণে টালবাহানা শুরু করেন। জমি অধি:গ্রহণে তিনি অনিয়ম করায় এই সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। দ্রুত সেতুর কাজ শুরু করতে স্থানীয়রা আন্দোলন শুরু করেন। এই সেতু বাস্তবায়ন হলে পূর্ব সিলেটের যোগযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করেন সুজন বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট আমান উদ্দিন।
নানা অনিয়মের কারণে তদন্তের মাধ্যমে ডিসি মুরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি তুলেছেন উপজেলার লোকজন। এক বছর আগে ক্রান্তিকালে সিলেটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। এই সময়ের মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার বিয়ানীবাজার সফর করেন।
সিলেট জেলা জজ আদালতের আইনজীবি এডভোকেট দেলোওয়ার হোসেন দিলু তাকে সিলেট বিদ্বেষী বলে অভিহিত করেছেন।