বিয়ানীবাজারে ইসলামী দল হিসেবে কার অবস্থা কেমন?
- আপডেট সময়ঃ ১১:১০:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫
- / ৫৮ বার পড়া হয়েছে।

বিয়ানীবাজারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনী রাজনীতির ইতিহাসে বিগত যেকোনও সময়ের চেয়ে বর্তমানে বেশি আলোচনায় ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব দলের প্রস্তুতিও এবার খানিকটা ভিন্ন। একদিকে যেমন বড় দলগুলোর সঙ্গে জোট করার আলোচনা চলছে, পাশাপাশি একক নির্বাচনের দিকেও রয়েছে নজর।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ছাড়াও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রয়েছে ১৫টি ইসলামি দল। আর নিবন্ধনের বাইরে সক্রিয় আরও অন্তত পঁচিশটি দল। কিছু দল কেবলমাত্র নামেই ব্র্যাকেটবন্দি। ভোটের রাজনীতিতে এসব দলের তেমন সাফল্য নেই।
বিয়ানীবাজারে জামায়াত-জমিয়ত ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দলের তেমন সাড়া নেই। তাদের যেমন রাজনৈতিক কার্যক্রম নেই তেমনি ভোটের মাঠেও তারা গুরুত্বহীন। জামায়াতে ইসলামী এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উভয়ই ইসলামী দল হিসেবে বিয়ানীবাজারে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। এখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে দু’বার জমিয়ত সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেন। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে একবার জামায়াত প্রার্থী দলটির আমীর মাওলানা ফয়জুল ইসলাম অল্পভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ইউপি চেয়ারম্যান পদে লাউতা ও মুড়িয়ার চেয়ারম্যান জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত। স্থানীয়ভাবে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক কার্যক্রম, জনসমর্থন এবং বৃহত্তর ইসলামপন্থী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরির চেষ্টার কারণে শক্তিশালী অবস্থানে আছে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে এর দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য এবং নির্বাচনী জোটের অংশ হিসেবে ক্ষমতাশালী ভূমিকা রাখার কারণে এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। তবে এবারের জাতীয় সংসদের নির্বাচনী মাঠে জামায়াতে ইসলামীকে এগিয়ে রাখতে চান অনেকেই। আসন্ন নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী থেকে এই আসনে লড়বেন মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন আর জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে হাফিজ ফখরুল ইসলাম।
এর বাইরে ফুলতলী পীর সমর্থিত আনজুমানে আল ইসলাহ’র কর্মী-সমর্থক থাকলেও ভোটের মাঠে তাদের প্রভাব নেই।
এছাড়াও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (হাতপাখা), মাওলানা মামুনুল হক-মাওলানা জালালুদ্দিন আহমেদের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (রিকশা), মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ-অধ্যাপক আহমদ আবদুল কাদেরের খেলাফত মজলিস (দেওয়াল ঘড়ি), মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজি-ইউসুফ সাদেকের বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ), সারওয়ার কামাল আজিজী-মুসা বিন ইজহারের নেজামে ইসলাম পার্টি (বই), মাওলানা আবদুল কাদির-মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজির ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার), মোস্তফা আমির ফয়সাল-শামীম হায়দারের জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল), সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী ও আবুল বাশার মুহাম্মদ জয়নুল আবেদীন জুবাইরের ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার), এমএ মতিন স উ ম আব্দুস সামাদের বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি), সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমদের বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা), নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী-সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা), ব্যারিস্টার নাসিম খান-রেজওয়ান মর্তুজার বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল (হাত পাঞ্জা), অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ-কাজী আবুল খায়েরের বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) এবং ইমাম হায়াত ও শেখ রায়হান রাহবারের ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশের (আপেল) কোন অস্থিত্ব নেই।
যদিও দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে মাওলানা সাদিকুর রহমান এই আসনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন বলে গণসংযোগ করছেন।
এ বিষয়ে সুজন বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন বলেন, ‘অনেক সময় প্রার্থী বা দলের জোয়ার দেখে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেন। এ ক্ষেত্রে কেউ কেউ ভোটের দিন সকালেও পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারেন। তবে দেশের ইসলামিদলগুলোর অতীতের সাফল্য কী সেটার বাইরে দেখতে হবে এবার তাদের পক্ষে জনমত কী?’ তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে জুলাই আন্দোলনে মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণ থাকায় তাদের হয়তো কিছুটা এগিয়ে রাখতে পারে। আবার জামায়াতসহ সব ইসলামি দল এক জোট হলে আরও ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এবার এক ধরনের জোয়ার আছে ইসলামি দলগুলোর ব্যাপারে। তবে জামায়াত ছাড়াও অন্য ইসলামি দলগুলো বড় দল বিএনপির দিকে ঝুঁকলেও তাদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।’
বিয়ানীবাজার কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি এডভোকেট মো: আবুল কাশেম বলেন, ‘অনেক ইসলামি দলের নেতাকর্মীরা মসজিদসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অঙ্গনে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থাও আছে। তাই অনেক সময় হয়তো ভোটাররা তাদের কথায়ও আকৃষ্ট হতে পারেন।’




















