১১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫

বিয়ানীবাজারে ঠিকানা’র ধারেকাছে যাননা বীর মুক্তিযোদ্ধারা

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময়ঃ ১১:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে।

বিয়ানীবাজার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন-ফাইল ছবি

কয়েক বছর পূর্বে আধুনিকভাবে নির্মিত হয় বিয়ানীবাজার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। তিন তলা বিশিষ্ট এ ভবন নির্মাণের পর থেকেই অনেকটা পরিত্যক্ত। কমপ্লেক্সটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রমের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বেশী ব্যবহৃত হয়েছে বলে বিরোধী রাজনীতিক নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের অঘোষিত কার্যালয় হিসেবে এই ভবনটি ব্যবহারের কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের যাতায়াত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। অতি রাজনীতিকরণের ফলে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিজস্ব ঠিকানায় বসতে অনীহা প্রকাশ করতেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

তাছাড়া নির্বাচন না হওয়ায় বিগত সাড়ে ৭ বছর থেকে অকার্যকর হয়ে পড়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের ক্যাম্পাস মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবন। নির্বাচিত কমিটি না থাকায় উপজেলা সংসদের নেই কোনো কার্যক্রম। প্রশাসনিকসহ যতটুকু কার্যক্রম রয়েছে তাও চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে। বিয়ানীবাজারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসে প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ায় অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে কার্যালয়। ফলে এক সময়ের জমজমাট এই সংগঠনটি ক্রমেই অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাগণ না আসায় এবং কোনো কার্যক্রম না থাকায় অনেকটা ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। ভবনের অধিকাংশ রুমের দরজা-জানালা ভাঙা।

সরজমিন বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করেও দেখা মিলেনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার। কোনোদিন হাতেগোনা দুই-এক মুক্তিযোদ্ধা এলেও তাদের পরামর্শ দেওয়ারও কেউ নেই।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ মে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু পরবর্তীতে সেই নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এরপর নির্বাচন নিয়ে আর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও এই নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি সূত্র বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করে জামুকা অধ্যাদেশ তৈরি করা হচ্ছে। অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই বড় পরিসরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু করা হবে দেশজুড়ে। এই কাজে মাঠপর্যায়ে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে সক্রিয় করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ভবনটি সম্মানীত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তাদের জন্য ভবনের দরজা সবসময় খোলা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এই ভবন ব্যবহারের অনুরোধ জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ানীবাজারে ঠিকানা’র ধারেকাছে যাননা বীর মুক্তিযোদ্ধারা

আপডেট সময়ঃ ১১:৩৭:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

কয়েক বছর পূর্বে আধুনিকভাবে নির্মিত হয় বিয়ানীবাজার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। তিন তলা বিশিষ্ট এ ভবন নির্মাণের পর থেকেই অনেকটা পরিত্যক্ত। কমপ্লেক্সটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রমের চেয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে বেশী ব্যবহৃত হয়েছে বলে বিরোধী রাজনীতিক নেতাকর্মীদের অভিযোগ। আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের অঘোষিত কার্যালয় হিসেবে এই ভবনটি ব্যবহারের কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধাগনের যাতায়াত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। অতি রাজনীতিকরণের ফলে বিয়ানীবাজার পৌরশহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিজস্ব ঠিকানায় বসতে অনীহা প্রকাশ করতেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

তাছাড়া নির্বাচন না হওয়ায় বিগত সাড়ে ৭ বছর থেকে অকার্যকর হয়ে পড়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের ক্যাম্পাস মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবন। নির্বাচিত কমিটি না থাকায় উপজেলা সংসদের নেই কোনো কার্যক্রম। প্রশাসনিকসহ যতটুকু কার্যক্রম রয়েছে তাও চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে। বিয়ানীবাজারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসে প্রয়োজন ছাড়া না যাওয়ায় অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে কার্যালয়। ফলে এক সময়ের জমজমাট এই সংগঠনটি ক্রমেই অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপ নিচ্ছে। নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধাগণ না আসায় এবং কোনো কার্যক্রম না থাকায় অনেকটা ভূতুড়ে প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। ভবনের অধিকাংশ রুমের দরজা-জানালা ভাঙা।

সরজমিন বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করেও দেখা মিলেনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার। কোনোদিন হাতেগোনা দুই-এক মুক্তিযোদ্ধা এলেও তাদের পরামর্শ দেওয়ারও কেউ নেই।

সর্বশেষ ২০২৩ সালের ১৩ মে সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু পরবর্তীতে সেই নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এরপর নির্বাচন নিয়ে আর কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও এই নির্বাচন নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকটি সূত্র বলছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা যাচাই-বাচাই করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ করে জামুকা অধ্যাদেশ তৈরি করা হচ্ছে। অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত হওয়ার পরেই বড় পরিসরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই শুরু করা হবে দেশজুড়ে। এই কাজে মাঠপর্যায়ে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত করা হবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে সক্রিয় করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই ভবনটি সম্মানীত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। তাদের জন্য ভবনের দরজা সবসময় খোলা। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের এই ভবন ব্যবহারের অনুরোধ জানান।

নিউজটি শেয়ার করুন