১১:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

বিয়ানীবাজার টোপ পার্টির অভয়ারণ্য!

রিপোর্টার নামঃ
  • আপডেট সময়ঃ ১১:০০:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে।

মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের (বিকাশ) গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অল্প সময়ের ব্যবধানে বিত্তবান হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি ‘প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে’। এসব ডিজিটাল প্রতারকেরা স্থানীয়ভাবে ‘টোপ পার্টির’ সদস্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এই পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে অনেকেই।

ভুক্তভগীরা জানান, প্রথমে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে, রিসিভ করলে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে শুরু। তারপর বিকাশ, অথবা নগদ একাউন্টে সমস্যার কথা বলে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আবার অনেকের লটারী ভাগ্য খুলেছে বলেও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন তারা এভাবে একের পর এক টোপ দিতেই থাকে, টোপ গিললেই সাধারণ মানুষ হারাচ্ছেন সর্বস্ব।

 

এ বিষয়ে অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিকাশ প্রতারণার বেশী শিকার হচ্ছেন নারীরা। তারা প্রতারিত হওয়ার পরও মুখ খুলেননা। আর প্রতারকরা এমনভাবে কথা বলে এতে বোঝা যায় বিকাশ কোম্পানীর কেউ কথা বলছে। সম্প্রতি বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মো. জয়নুল ইসলামের সাথে কথা বলে একজন বিকাশ প্রতারক। তবে তিনি সহজেই বিষয়টি ধরে ফেলেন। তাই ওই প্রতারক তাকে গালিগালাজ করে ফোন রেখে দেয়।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিকাশ ডিলার কিংবা এজেন্টরাও এসব প্রতারকদের ধরতে পারেননা। তাই তারা ক্রমশ: বেপরোয়া । জানা যায়, প্রতারকরা বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে। বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে স্পুফ কল করে। যেমন বিকাশের ২৪৭ নম্বর দিয়ে গ্রাহকদের ফোন কল করে কখনও বিকাশ অ্যাকাউন্ট আপডেট করার কথা বলে ওটিপি ও পিন নম্বর নিয়ে নেয়।

আবার কখনও বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যে নম্বরে টাকা পাঠানো হয় তাকে কল করে বলা হয় ভুলে টাকা চলে গেছে।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান বলেন, ‘যে কোন প্রতারণার বিরুদ্ধে পুলিশ সবসময় সোচ্চার। বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ এরকম কোন অভিযোগ পেলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়। তবে এসব প্রতারণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকাশের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা শামসুল হায়দার ডালিম বলেন, ‘কথার প্যাঁচে মূলত এরা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে। আমরা সারা বছর সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছি যে, এ ধরনের কোনো প্রতারণামূলক কথা বা গোপন পিন বা অন্য তথ্য চাইলে শুনবেনই না। ফোন কেটে দেবেন। তারপরও অনেক গ্রাহক প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছে। বিকাশ বিভিন্ন প্রচারে কিন্তু বলছে, বিকাশ কারও কাছে ফোন দিয়ে কোনো তথ্য চায় না। তারপরও অনেকে প্রতারকের কথার প্যাঁচে পড়ে তথ্য দিয়ে দেয়। অনেকে প্রতারণার বিষয়টি ধরে ফেলেন, আবার অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এক্ষেত্রে আমরা বলব, কেউ ফোন দিলে কোনো গ্রাহক যেন তথ্য না দেয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিয়ানীবাজার টোপ পার্টির অভয়ারণ্য!

আপডেট সময়ঃ ১১:০০:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের (বিকাশ) গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অল্প সময়ের ব্যবধানে বিত্তবান হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি ‘প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে’। এসব ডিজিটাল প্রতারকেরা স্থানীয়ভাবে ‘টোপ পার্টির’ সদস্য হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। এই পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে অনেকেই।

ভুক্তভগীরা জানান, প্রথমে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে, রিসিভ করলে সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে শুরু। তারপর বিকাশ, অথবা নগদ একাউন্টে সমস্যার কথা বলে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আবার অনেকের লটারী ভাগ্য খুলেছে বলেও টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিদিন তারা এভাবে একের পর এক টোপ দিতেই থাকে, টোপ গিললেই সাধারণ মানুষ হারাচ্ছেন সর্বস্ব।

 

এ বিষয়ে অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিকাশ প্রতারণার বেশী শিকার হচ্ছেন নারীরা। তারা প্রতারিত হওয়ার পরও মুখ খুলেননা। আর প্রতারকরা এমনভাবে কথা বলে এতে বোঝা যায় বিকাশ কোম্পানীর কেউ কথা বলছে। সম্প্রতি বিয়ানীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মো. জয়নুল ইসলামের সাথে কথা বলে একজন বিকাশ প্রতারক। তবে তিনি সহজেই বিষয়টি ধরে ফেলেন। তাই ওই প্রতারক তাকে গালিগালাজ করে ফোন রেখে দেয়।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বিকাশ ডিলার কিংবা এজেন্টরাও এসব প্রতারকদের ধরতে পারেননা। তাই তারা ক্রমশ: বেপরোয়া । জানা যায়, প্রতারকরা বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে। বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে স্পুফ কল করে। যেমন বিকাশের ২৪৭ নম্বর দিয়ে গ্রাহকদের ফোন কল করে কখনও বিকাশ অ্যাকাউন্ট আপডেট করার কথা বলে ওটিপি ও পিন নম্বর নিয়ে নেয়।

আবার কখনও বিকাশ এজেন্টের দোকান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে যে নম্বরে টাকা পাঠানো হয় তাকে কল করে বলা হয় ভুলে টাকা চলে গেছে।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান বলেন, ‘যে কোন প্রতারণার বিরুদ্ধে পুলিশ সবসময় সোচ্চার। বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ এরকম কোন অভিযোগ পেলে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নেয়। তবে এসব প্রতারণার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার বিকল্প নেই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিকাশের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা শামসুল হায়দার ডালিম বলেন, ‘কথার প্যাঁচে মূলত এরা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে। আমরা সারা বছর সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছি যে, এ ধরনের কোনো প্রতারণামূলক কথা বা গোপন পিন বা অন্য তথ্য চাইলে শুনবেনই না। ফোন কেটে দেবেন। তারপরও অনেক গ্রাহক প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছে। বিকাশ বিভিন্ন প্রচারে কিন্তু বলছে, বিকাশ কারও কাছে ফোন দিয়ে কোনো তথ্য চায় না। তারপরও অনেকে প্রতারকের কথার প্যাঁচে পড়ে তথ্য দিয়ে দেয়। অনেকে প্রতারণার বিষয়টি ধরে ফেলেন, আবার অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এক্ষেত্রে আমরা বলব, কেউ ফোন দিলে কোনো গ্রাহক যেন তথ্য না দেয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন