১১:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

ভারতে গ্রেপ্তার আবু সাঈদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশ কর্মকর্তা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪৭ বার পড়া হয়েছে।

জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত অনেকের মতো ভারতে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার (এপিবি) মো. আরিফুজ্জামান । তবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়ে গেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের ৩টি হত্যা ও ২টি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে।

 

শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় তাকে আটক করে বিএসএফ। সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার কামরুজ্জামান জানান, আরিফের কাছে থাকা পরিচয়পত্র দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তাকে পশ্চিমবঙ্গের স্বরূপনগর থানায় রাখা হয়েছে।

রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টারস) হাবিবুর রহমান জানান, আরিফুজ্জামান নীলফামারীর বাসিন্দা। গত বছর ৫ আগস্ট তাকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এপিবিএনে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

গত বছরের ১৪ আগস্ট কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গণি।

আরিফুজ্জামান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটিতে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ৬ জন ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকায় ছিলেন আরিফুজ্জামান। গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুর জিলা স্কুল মোড় থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়ার পথে ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে তাদের বাধা দিয়ে তিনি লাঠিচার্জের নেতৃত্ব দেন। এছাড়া, শহীদ আবু সাঈদকে গুলি করার সময় এবং তার আগেও সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন এবং নিজেও গুলি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহদি হাসান অনিক জানান, আন্দোলন চলাকালে এএসপি আরিফ ছিলেন সবচেয়ে মারমুখি। তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, কলা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলায় বাদীর কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা আদায় করে আরিফ নিজের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

আরিফুজ্জামান বর্তমানে ভারতের হাতে আটক রয়েছেন অনুপ্রবেশের অভিযোগে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া এখনো স্পষ্ট নয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বিষয়টি দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ভারতে গ্রেপ্তার আবু সাঈদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি পুলিশ কর্মকর্তা

আপডেট সময়ঃ ০৮:১২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত অনেকের মতো ভারতে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার (এপিবি) মো. আরিফুজ্জামান । তবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে ধরা পড়ে গেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনের ৩টি হত্যা ও ২টি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে।

 

শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাকিমপুর চেকপোস্ট পার হওয়ার সময় তাকে আটক করে বিএসএফ। সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার কামরুজ্জামান জানান, আরিফের কাছে থাকা পরিচয়পত্র দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে তাকে পশ্চিমবঙ্গের স্বরূপনগর থানায় রাখা হয়েছে।

রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (হেডকোয়ার্টারস) হাবিবুর রহমান জানান, আরিফুজ্জামান নীলফামারীর বাসিন্দা। গত বছর ৫ আগস্ট তাকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এপিবিএনে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়। তবে কিছুদিন পর থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন।

গত বছরের ১৪ আগস্ট কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গণি।

আরিফুজ্জামান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। মামলাটিতে ৩০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ৬ জন ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।

রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর সবচেয়ে আগ্রাসী ভূমিকায় ছিলেন আরিফুজ্জামান। গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুর জিলা স্কুল মোড় থেকে শিক্ষার্থীদের মিছিল রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে যাওয়ার পথে ক্যাপ্টেন ব্যাকোলজি মোড়ে তাদের বাধা দিয়ে তিনি লাঠিচার্জের নেতৃত্ব দেন। এছাড়া, শহীদ আবু সাঈদকে গুলি করার সময় এবং তার আগেও সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন এবং নিজেও গুলি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহদি হাসান অনিক জানান, আন্দোলন চলাকালে এএসপি আরিফ ছিলেন সবচেয়ে মারমুখি। তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্ব দেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, কলা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ হোসেন হত্যা মামলায় বাদীর কাছ থেকে কৌশলে হলফনামা আদায় করে আরিফ নিজের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

আরিফুজ্জামান বর্তমানে ভারতের হাতে আটক রয়েছেন অনুপ্রবেশের অভিযোগে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া এখনো স্পষ্ট নয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বিষয়টি দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন