লড়াইটা ভারত বনাম পাকিস্তানের। তবে এক লড়াইয়ের ভেতরে থাকে আরও অনেক লড়াই। একেকজন ব্যাটসম্যান–বোলারের লড়াই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। এশিয়া কাপের আগে দুই দলের শক্তি–দুর্বলতা মিলিয়ে এমন কিছু আকর্ষণীয় দ্বৈরথ নিয়েই আলোচনা।
ভারতীয় ওপেনার বনাম আফ্রিদি
পাকিস্তান দলে শাহিন শাহ আফ্রিদির মূল ভূমিকা নতুন বলে উইকেট নেওয়া। বাঁহাতি এই পেসার এ কারণেই বিশেষভাবে পরিচিত। ভারত ম্যাচেও আফ্রিদির প্রধান কাজ এটাই থাকবে। যদিও কাজটা সহজ হবে না।
কারণ, প্রতিপক্ষ দলে যে ওপেনার হিসেবে খেলবেন অভিষেক শর্মা আর শুবমান গিল। অভিষেকের কাজ পাওয়ারপ্লেতে বোলারদের বেধড়ক পিটুনি দেওয়া। গিলের ভূমিকা কিছুটা ভিন্ন। চালিয়ে খেলার আগে কিছুটা সময় নেন তিনি। যদিও স্ট্রাইক রেট ঘুরেফিরে ১৪০-১৫০–এর কাছাকাছিই থাকে। পাকিস্তানকে ভারতের বিপক্ষে জিততে হলে এই দুই ওপেনারকে দ্রুত ফেরাতে হবে। আফ্রিদি কি পারবেন?
ধারে–ভারে ভারতীয় দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও বরুণ চক্রবর্তী বেশ এগিয়ে। সেই তুলনায় আবরার আহমেদ ও সুফিয়ান মুকিমকে নতুনই বলা যায়। তবে দুই দলেই রিস্ট স্পিনারদের কাজটা এক—যত পারো উইকেট নাও। কুলদীপ ও বরুণ তা নিচ্ছেনও। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ৩২ উইকেট বরুণের। আর কুলদীপ তো সর্বশেষ ম্যাচে ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
পাকিস্তানের আবরারও ছন্দে আছেন। সর্বশেষ তিন ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৭টি। বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার মুকিম পাকিস্তানের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৮টি, উইকেট নিয়েছেন ২৭টি। ২০২৩ সালে ইমার্জিং এশিয়া কাপে ৩ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে পাকিস্তান ‘এ’ দলকে শিরোপা জেতাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন এই স্পিনার। মূল এশিয়া কাপে কি পারবেন, দেখা যাক!
হারিস বনাম বুমরা: হারিস কি কনস্টাস হতে পারবেন
মোহাম্মদ হারিস আর অস্ট্রেলিয়ার স্যাম কনস্টাসের একটা মিল আছে। দুজনই বল বাছবিচার করেন না। এভাবে খেলেই বুমরার বিপক্ষে সফল হয়েছিলেন কনস্টাস। সেটি অবশ্য টেস্টে, ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরে। পাকিস্তানের হারিস কি একই কাজ করতে পারবেন?
প্রথাগত ব্যাটিং বুমরার মতো বিশ্বসেরা বোলারের বিপক্ষে কাজ না–ও করতে পারে। সে ক্ষেত্রে রিভার্স স্কুপসহ ব্যাকরণের বাইরের শটগুলোই হতে পারে হারিসের ভরসা। তাঁর ছোট ক্যামিও পাকিস্তানকে এই লড়াইয়ে এগিয়ে দিতে পারে। এর আগে ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কাগিসো রাবাদার এক ওভারে ১৭ রানসহ ১১ বলে ২৮ রানের ক্যামিও খেলেছিলেন হারিস। এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ফিফটিও করেছেন হারিস। হয়েছেন ম্যাচসেরা। বুমরার বিপক্ষে প্রথমবার খেলার আগে এটা তাঁকে বাড়তি অনুপ্রাণিত করতে পারে।
হাসান নেওয়াজ বনাম ভারতীয় স্পিন
অল্প দিনেই হাসান নেওয়াজ পাকিস্তানের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যানে পরিণত হয়েছেন। চলতি বছর টি-টোয়েন্টিতে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৭৪.০৯, যা শুধু ডেভাল্ড ব্রেভিস ও টিম ডেভিডের চেয়ে কম। স্পিনের বিরুদ্ধে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৫০, পেসের বিরুদ্ধে ১৭৩.৪৮।
মিডল ওভারে কুলদীপ বরুণদের বিপক্ষে বড় শট খেলার কাজটা হাসান নেওয়াজেরই করতে হবে। আর তা না পারলে ভারতের বিপক্ষে হয়তো ভদ্রস্থ কোনো সংগ্রহতেই থামতে হবে পাকিস্তানকে।
গিল বনাম আবরার: বিতর্কিত সেই উদ্যাপন
দুজনের মধ্যে একটা অতীত আছে, যা এই ম্যাচের আগে দুজনকেই আলোচনায় রাখছে। গত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গিলকে অসাধারণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করার পর বিতর্কিতভাবে উদ্যাপন করেন আবরার।
সেদিন গিলকে ফেরানোর পর আবরার দুই হাত বগলে ঢুকিয়ে গিলের দিকে শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন ও মাথা নাড়িয়ে গিলকে মাঠের বাইরে বেরিয়ে যেতে বলেন। গিলও পাল্টা তাকান আবরারের দিকে।
পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারানোর ম্যাচে এই ঘটনা বাড়তি উত্তেজনার জন্ম দিয়েছিল। ওই ঘটনার পর আজ আবার মুখোমুখি হবেন দুজন।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
©২০২৫ সিলেট ২১ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Developed Success Life IT