মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাকালুকি হাওরে নৌকাবাইচ দেখতে শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই ছোট-বড় নৌকায় করে হাওরের চারপাশে মানুষের ভিড় জমে যায়। রাস্তাতেও মানুষের সমাগম হয়। এ উপলক্ষে স্থানীয়রা অস্থায়ী খাবারের দোকান বসান। নয়াগ্রাম ও খালেরমুখ বাজারের বাসিন্দারা এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, নয়াগ্রাম ও খালেরমুখ বাজার ঘেঁষে বিস্তৃত হাকালুকি হাওরে অথই পানি। হাওরের নয়াগ্রাম প্রান্তে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকায় করে লোকজন সেখানে জড়ো হন। অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসেন। কেউ কেউ স্মার্টফোনে সরাসরি সম্প্রচারও করছিলেন। নয়াগ্রামের রাস্তায় ঝালমুড়ি, বাদাম, আমড়া, আইসক্রিম ও ঠান্ডা পানীয় বিক্রি করতে অস্থায়ী দোকান বসান স্থানীয় লোকজন।
জাঙ্গিরাই এলাকা থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করে আসা ব্যবসায়ী বাবুল আহমদ বলেন, ‘শুক্রবারে দোকান বন্ধ থাকে। তাই কয়েকজন মিলে চলে এলাম। হাওরে ঘুরলাম, নৌকাবাইচও দেখা হয়ে গেল।’ বড়লেখার সুজানগর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসা কাতারপ্রবাসী নজমুল ইসলাম বলেন, ‘ফেসবুক, ইউটিউবে নৌকাবাইচ দেখি। বিদেশে থাকায় অনেক দিন ধরে সরাসরি দেখা হয়নি। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে চলে এলাম।’
বিকেল চারটার দিকে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান গেয়ে গেয়ে বাইচ চলে। দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শকেরা হইহুল্লোড়ে মাতেন। প্রতিযোগিতায় কুলাউড়া উপজেলার সাদিপুর, বড়লেখার ভোলারকান্দি ও সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার নূরজাহানপুর দল অংশ নেয়। এতে সাদিপুর প্রথম, নূরজাহানপুর দ্বিতীয় ও ভোলারকান্দি দল তৃতীয় স্থান অর্জন করে।
সন্ধ্যার পর পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম স্থান অর্জনকারী দল গরু, দ্বিতীয় দল রেফ্রিজারেটর ও তৃতীয় দল খাসি পায়। অনুষ্ঠানে কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজমল হোসেন, জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাছুম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজকদের পক্ষে স্থানীয় বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মূলত গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা ও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে আমরা নৌকাবাইচের আয়োজন করেছি।’ তাঁর দাবি, এ আয়োজনে ১০ হাজারের বেশি দর্শকের সমাগম হয়েছিল।
এদিকে নৌকাবাইচ শেষে বাড়ি ফেরার পথে নূরজাহানপুর ও ভোলারকান্দি এলাকার দুটি পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই-তিনজন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে স্থানীয় আরও চার-পাঁচজন আহত হন। পরে তাঁদের জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এ সময় আতঙ্কে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা দর্শকেরা ছোটাছুটি শুরু করেন।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
©২০২৫ সিলেট ২১ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Developed Success Life IT