০৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা ডিএনসিসির খালগুলো।

স্টাফ রির্পোটার
  • আপডেট সময়ঃ ০১:০২:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / ৬১ বার পড়া হয়েছে।

ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) খালগুলো। ফলে ওসব খালে পানির প্রবাহ সরু হয়ে এসেছে। খালগুলোর কোথাও কোথাও ময়লা-আবর্জনায় ঢাকা পড়েছে। কোথাও বর্জ্য জমাট বেঁধে আগাছা জন্মেছে। তবে কিছু খালে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো ও খনন কাজ করায় ফিরেছে পানির প্রবাহ। ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার বেশির ভাগ খালের চিত্র এ রকম। তবে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিএনসিসির ২৯টি খালের বেশির ভাগই পরিচ্ছন্ন ও পানির প্রবাহ রয়েছে। ডিএনসিসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিএনসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্যানুযায়ী ২৯টি খালের মোট দৈর্ঘ্যই ৯৮ কিলোমিটার। কিন্তু গত ৩০ মে ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসকের বরাতে বলা হয়, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৯টি খালের ১০০ কিলোমিটারের বেশি এলাকা দখলমুক্ত করে পানির প্রবাহ সৃষ্টি করা হয়েছে। যদিও বর্তমানে ১৩টি খালের মধ্যে ৮টি খালেরই বিভিন্ন অংশে ময়লা-আবর্জনা জমে রয়েছে। মিরপুর-৭ নম্বর সেকশনের আরামবাগ আবাসিক এলাকার পাশে আরামবাগ খালটি ময়লা-আবর্জনায় ঠাসা। রূপনগর সড়ক অংশ থেকে খালের উজানে প্রায় ১০০ মিটার এলাকায় বর্জ্যরে কারণে পানি দেখা যায়নি। ওই খালে পলিথিন, প্লাস্টিক, বিভিন্ন পণ্যের মোড়ক, কর্কশিটের বাক্সে বোঝাই। দীর্ঘদিনই সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মীকে ওই খাল পরিষ্কারের কাজ করতে দেখা যায়নি। আরআরামবাগ খালের প্রায় দেড়শ মিটার দূরে রূপনগর খাল। খালটির উজান ও ভাটি দুই দিকেই ময়লা-আবর্জনায় খালের প্রবাহ অর্ধেক হয়ে গেছে। সেখান থেকে প্রায় সোয়া তিনশ মিটার ভাটিতেই ইস্টার্ন হাউজিংয়ের প্রধান ফটকে খালে বর্জ্যে ঠাসা। মিরপুরে বাইশটেকি খালের দুটি অংশেই বর্জ্যের স্তূপ। খালটির জয়নগর সরকারি কর্মকর্তা আবাসনের পাশে  করপোরেশনের এসটিএসের পেছনে খালে ময়লা-আবর্জনায় ভরা। পল্লবীর আলমনগর অংশে খালটি সরু নালার মতো এবং ওই অংশের খালও ময়লা-আবর্জনায় ভরা। আর শ্যামলীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) পাশ থেকে খালের একটি অংশ কল্যাণপুর মূল খালের সঙ্গে মিশেছে। খালের ওই অংশ কল্যাণপুরের শাখা খালগুলোর একটি। খালটির বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের পেছনের অংশে উজানের দিকে আবর্জনা ও আগাছায় ভর্তি। ওই অংশে খালটি প্রায় মৃত। মোহাম্মদপুর এলাকার রামচন্দ্রপুর খালের মোহাম্মদিয়া হাউজিং লিমিটেডের ১ নম্বর সড়কের সেতু অংশে খালে বর্জ্য জমে রয়েছে। গাবতলী-সদরঘাট বেড়িবাঁধ সড়কের পশ্চিমে সাতমসজিদ হাউজিং এলাকায় খালের আরেক অংশে ঘাস ও আগাছায় ভরা। তবে ঢাকা উত্তর সিটির ১৩ খালের মধ্যে ৫টি খাল তুলনামূলক পরিষ্কার রয়েছে। ওই খালগুলো হচ্ছে মিরপুরের সাংবাদিক কলোনি খাল, বাউনিয়া খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, কল্যাণপুরুখ (গোদাখালী) খাল এবং কল্যাণপুর (বগার মা) খাল। ওই খালগুলোতে পানির প্রবাহও দেখা যায়।

সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের তিন উপদেষ্টা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিরপুরের বাউনিয়া খালের পরিষ্কার ও খননকাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু ফলে ওই খালটিতে পানি প্রবাহ বিদ্যমান। বাউনিয়া খালের দৈর্ঘ্য ৮ কিলোমিটার, প্রস্থ ১৮-২৫ মিটার। অর্পিত ক্রয়কার্য প্রক্রিয়ায় ওই খালের ২ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার অংশের পরিষ্কার ও খননকাজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে দিয়ে করানো হয়েছে। তাছাড়া মিরপুর-১১ নম্বর সেকশন এলাকার সাংবাদিক খাল, ইব্রাহিমপুর খাল ও কল্যাণপুরুখ (গোদাখালী) ও কল্যাণপুর (বগার মা) খালও তুলনামূলকভাবে কিছুটা পরিষ্কার। মিরপুরের পশ্চিম কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া, আগারগাঁওয়ের তালতলা, কল্যাণপুর ও দারুসসালাম এলাকা দিয়ে কল্যাণপুর খাল বা বগার মা খাল প্রবাহিত হয়েছে। ওই খালেও পানির প্রবাহ রয়েছে। তবে মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাদ আবাসিক এলাকার পেছনে ৫ নম্বর সড়কের সেতু অংশে কাটাসুর খাল বর্জ্যে ঠাসা। পানির প্রবাহ না থাকায় খালের ওই অংশ মৃতপ্রায়।

এদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানানন, মানুষ সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ময়লা-আবর্জনায় ভরে ফেলে ফেলে খাল। পাশাপাশি খালে পয়োবর্জ্য যায়। তাই খাল পরিষ্কারের কাজ ধারাবাহিকভাবে সারা বছর করতে হবে। প্রতিবছর খালের পেছনে প্রায় শত কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ রাখা হলেও তুলনামূলক কম খরচ করা হয়েছে। আর খালের সংখ্যা নয়, কতটুকু খাল পরিষ্কার ও সচল করা হয়েছে, সেটাই প্রাধান্য দেয়ার বিষয়। প্রথমে লক্ষ্য ছিল ঢাকার ২২ কিলোমিটার খাল পরিষ্কার ও খনন করা।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন