যাত্রী-পথচারীর নজর কাড়ছে সড়ক বিভাজকের ফুল

- আপডেট সময়ঃ ১২:৩৫:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / ১২ বার পড়া হয়েছে।

দুই পাশ দিয়ে হঠাৎ শাঁ শাঁ শব্দে ছোট-বড় যানবাহন ছুটে যায়। সকাল বলেই গাড়ির ভিড় অতটা নেই। সড়কের বিভাজকে বেড়ে ওঠা ফুলের গাছে গাড়ি ছুটে চলায় দমকা বাতাস এসে আছড়ে পড়ে। বাতাসের মৃদু ঝাপটায় ফুলকুমারীর দল দুলে ওঠে, নেচে ওঠে। যেন তারা নেচে-দুলে পথচারী ও যাত্রীদের সঙ্গে নীরবে গোপন কোনো কথা বলে, হাসি বিনিময় করে। এ এক অন্য সকালের গান, রঙিন ঘুম ভাঙার গান।
তখনো আকাশে রোদ ওঠেনি, ভাঙা ভাঙা মেঘে ছেয়ে আছে। মৌলভীবাজার শহর হয়ে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক চলে গেছে। সড়কের মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল অংশের মৌলভীবাজার শহর এলাকার প্রায় দেড়-দুই কিলোমিটারে এমনই এক রঙিন সময় তৈরি হয়েছে এখন। সড়ক বিভাজকে থরে থরে নানা জাতের, নানা রঙের ফুল ফুটেছে। ফুলেদের উচ্ছ্বাস চলছে।
রঙিন ফুল ছুটে চলা দূরগামী যাত্রী ও পথচারীর নজর কাড়ছে। মন আনমনা করছে। দিনের ক্লান্তির ভেতর রঙিন প্রজাপতির উড়ে চলার মতো ডালে ডালে ফুলগুলো নাচে। আজ শনিবার সকালেও মৌলভীবাজারের পশ্চিমবাজার আড়ত এলাকা থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের মোড় পর্যন্ত এই ফুলের নজরকাড়া সৌন্দর্য চোখে পড়েছে। আগের দিন শুক্রবার বিকেলের দিকে এই সড়ক দিয়ে যেতে পথে পথে ফুলের এমন হাসি-খেলা দেখা গেছে।
এখন প্রকৃতিতে বর্ষা। খুব ভারী বর্ষণ না থাকলেও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি নামে। এ যেন হাওয়াকে ভিজিয়ে দিতে কখনো একপশলা, কখনো ঝমঝমে বৃষ্টি নামে শহরে। সেই রেশ এই গাছগুলোয় পাওয়া যায়। গাছেরা সতেজ হয়ে আছে। পাতারা আরও সবুজ হয়েছে। ডালে ডালে ফুল ফুটেছে। অনেক জাতের ফুলের গাছ। গোলাপি, লাল, বেগুনি ও সাদা ফুরুস গাছের শাখা-প্রশাখায় ফুটেছে থোকা থোকা ফুল। সড়কের বেরিরপার এলাকা ও মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল এলাকার আশপাশেই ফুরুসের বেশি দেখা মেলে। ফাঁকে ফাঁকে ফুটেছে রঙ্গন। কিছু ফুল আছে, দেখে মনে হতে পারে ‘চিনি উহারে’। অনেকের কাছে অচেনা এসব ফুল। এর একটি হচ্ছে বেগুনি ফুরুস। হঠাৎ দেখলে মনে হবে চিরচেনা রূপসী জারুল। আর রাধাচূড়া, সে তো আছে আসরজুড়ে। এখানে লাল তো অন্যখানে হলুদ ফুল, সকাল-দুপুর-বিকেল রঙিন করে ফুটে আছে।
ঢাকা-মৌলভীবাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে সড়ক বিভাগের মোড় পর্যন্ত রাধাচূড়ার এলাকা বলেই মনে হয়। সব কটি গাছেই পাতার ফাঁক থেকে বেরিয়ে এসেছে ফুলেরা। পৌর কর্তৃপক্ষসহ যাঁরা এসব ফুলের গাছ লাগিয়েছেন, যত্ন করেছেন, কারও দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি গাছেরা। নিজেদের যতটা সম্ভব উজাড় করে ছড়িয়ে দিয়েছে ডালে ডালে রঙের খেলায়, ফুলের মেলায়। যান্ত্রিক ছুটে চলার মাঝে মনকে রাঙাতে, ক্লান্তি ভাঙাতে একপশলা রঙের বৃষ্টি হয়ে এভাবেই ফুলেরা মাঝে মাঝে ফিরে আসে এই শহরে।