১২:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

লিবিয়িায় ‘মাফিয়াদের হাতে’ বিক্রি হওয়া ১৬২ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৩:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে।

ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ ৯ মাস ধরে লিবিয়ায় বন্দি ছিলেন। লিবিয়ায় দালালরা তাদের বন্দি রেখে অসহ্য নির্যাতন করত। নির্যাতনের এক পর্যায়ে দালালরা ধরেই নিয়েছিল তারা মারা যাবেন। তাই তাদের ফেলে রেখে চলে যায়।
অমানবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া দুই তরুণ অবশেষে দেশে ফিরেছেন।

ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এদিন ১৬২ জন বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে ফিরেছেন; যারা বিভিন্ন কারণে দেশটিতে আটকা পড়েছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্র্যাক জানিয়েছে, ২০২৩ সালে গ্রামের দালালের খপ্পরে পড়ে সাগর ও তানজির ৪ লাখ টাকা খরচ করে দেশ ছাড়েন লিবিয়ার উদ্দেশে।লিবিয়ায় ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে। সেখানে কোনো কাজের সন্ধান না দিয়ে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় পাচারকারীরা তাদের বিক্রি করে দেয় এক মাফিয়া চক্রের হাতে। ৮০ জন বাংলাদেশির সঙ্গে তাদেরও অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখে তারা। বাড়ি থেকে টাকা আদায়ের জন্য আটক ব্যক্তিদের লোহার রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়।

ব্র্যাক বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানিয়েছে, একসময় সাগর ও তানজিরের শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হলে তাদের ফেলে রেখে চলে যায় চক্রের সদস্যরা। তখন এই দুই তরুণ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির এক আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছায়। এরপর সাগর ও তানজিরের খোঁজ পেতে সহায়তার জন্য ব্র্যাকের কাছে তাদের পরিবারে আবেদন করে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন’ সাড়া দেয়। তাদের নেতৃত্ব ও তদারকিতে আইওএম হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে লিবিয়ায় আইওএমের সহায়তায় এই দুই তরুণকে উদ্ধার করে সেইফ হোমে নিয়ে যাওয়া হয়।সব জটিলতা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে বুধবার তারা ফেরেন।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল-আমিন নয়ন বলেন, লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৬২ বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে ছিলেন মাফিয়াদের হাতে জিম্মি হওয়া সাগর, তানজির ও আলমগীর হোসেন। তাদের উদ্ধার ও প্রত্যাবাসনে আইওএম হেডকোয়ার্টার, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের টিআইপি অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন (আইজেএম) এর সাথে আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে। এই প্রত্যাবাসন শুধু ফিরে আসা নয়, এটা জীবন বাঁচার গল্প। একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের পথে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

লিবিয়িায় ‘মাফিয়াদের হাতে’ বিক্রি হওয়া ১৬২ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন

আপডেট সময়ঃ ০৩:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ ৯ মাস ধরে লিবিয়ায় বন্দি ছিলেন। লিবিয়ায় দালালরা তাদের বন্দি রেখে অসহ্য নির্যাতন করত। নির্যাতনের এক পর্যায়ে দালালরা ধরেই নিয়েছিল তারা মারা যাবেন। তাই তাদের ফেলে রেখে চলে যায়।
অমানবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া দুই তরুণ অবশেষে দেশে ফিরেছেন।

ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টায় বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। এদিন ১৬২ জন বাংলাদেশি লিবিয়া থেকে ফিরেছেন; যারা বিভিন্ন কারণে দেশটিতে আটকা পড়েছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্র্যাক জানিয়েছে, ২০২৩ সালে গ্রামের দালালের খপ্পরে পড়ে সাগর ও তানজির ৪ লাখ টাকা খরচ করে দেশ ছাড়েন লিবিয়ার উদ্দেশে।লিবিয়ায় ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে। সেখানে কোনো কাজের সন্ধান না দিয়ে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় পাচারকারীরা তাদের বিক্রি করে দেয় এক মাফিয়া চক্রের হাতে। ৮০ জন বাংলাদেশির সঙ্গে তাদেরও অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখে তারা। বাড়ি থেকে টাকা আদায়ের জন্য আটক ব্যক্তিদের লোহার রড, লাঠি দিয়ে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দিয়ে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়।

ব্র্যাক বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানিয়েছে, একসময় সাগর ও তানজিরের শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হলে তাদের ফেলে রেখে চলে যায় চক্রের সদস্যরা। তখন এই দুই তরুণ লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির এক আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছায়। এরপর সাগর ও তানজিরের খোঁজ পেতে সহায়তার জন্য ব্র্যাকের কাছে তাদের পরিবারে আবেদন করে। ওই আবেদনের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন’ সাড়া দেয়। তাদের নেতৃত্ব ও তদারকিতে আইওএম হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে লিবিয়ায় আইওএমের সহায়তায় এই দুই তরুণকে উদ্ধার করে সেইফ হোমে নিয়ে যাওয়া হয়।সব জটিলতা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে বুধবার তারা ফেরেন।

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থাপক আল-আমিন নয়ন বলেন, লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৬২ বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে ছিলেন মাফিয়াদের হাতে জিম্মি হওয়া সাগর, তানজির ও আলমগীর হোসেন। তাদের উদ্ধার ও প্রত্যাবাসনে আইওএম হেডকোয়ার্টার, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের টিআইপি অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন (আইজেএম) এর সাথে আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছি মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে। এই প্রত্যাবাসন শুধু ফিরে আসা নয়, এটা জীবন বাঁচার গল্প। একটি নিরাপদ ভবিষ্যতের পথে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এক পদক্ষেপ।

নিউজটি শেয়ার করুন