সিলেটের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যর্টনকেন্দ্রের লুট হওয়া পাথর উদ্ধার ও প্রতিস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত ১০ লাখ ঘনফুটের বেশি পাথর উদ্ধার এবং প্রায় আড়াই লাখ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সাদাপাথরে প্রতিস্থাপন কাজ শেষ হওয়া প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লুট হওয়া সাদাপাথর ফেরতের তিনদিনের সময়সীমা আজ সোমবার সন্ধ্যায় শেষ হচ্ছে। এছাড়া গোয়াইনঘাটের জাফলং জিরো পয়েন্টের পাথর মঙ্গলবারের মধ্যে ফেরত দিনে রোববার নতুন করে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে সাদাপাথর প্রতিস্থাপনে এতদিন ছোট নৌকা দিয়ে বহন ও শ্রমিকদের ব্যবহার করা হলেও গতকাল থেকে পেলোডার মেশিন ও ইঞ্জিনচালিত স্টিলবডির নৌকা ব্যবহার করা হচ্ছে। শ্রমিক সংকট ও প্রতিস্থাপন দ্রুত করার জন্য এম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রবিন মিয়া।
তিনি জানিয়েছেন, কম সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পাথর লোড-আনলোডে পেলোডার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি জানান, বিভিন্ন স্থান থেকে ইতোমধ্যে ১০ লাখ ঘনফুটের বেশি পাথর জব্দ করা হয়েছে। প্রতিস্থাপন হয়েছে আড়াইলাখ ঘনফুটের মত। প্রতিদিন জব্দ করা পাথর ভোলাগঞ্জ পর্যটনঘাটে ট্রাকযোগে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই পাথর যাতে দ্রুত প্রতিস্থাপন করা যায় সেজন্য কাজ চলছে।
গত ১০ ও ১১ আগস্ট ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র থেকে দলবেঁধে পাথর লুটের পর দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। কঠোর অবস্থান নিয়ে পাথর উদ্ধার অভিযানে নামে প্রশাসন। শুরুতে গত ১৪ আগস্ট ভোলাগঞ্জ কালাইরাগ থেকে ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে জেলা প্রশাসনের একটি টিম। ওইদিন তা প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরে একের পর এক ভোলাগঞ্জ, পাড়ুয়া, ধোপাগুল, জৈন্তাপুরসহ দেশের কয়েকটি স্থান থেকে সাদাপাথর জব্দ করা হয়। গত ১০ দিন দশ লাখের বেশি ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাথর জব্দ করা হয় ধোপাগুল স্টোন ক্রাশার জোন থেকে।
গতকাল আরও ৬০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করার কথা জানিয়েছেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়াত শারমীন। তিনি জানান, শনিবার রাত থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত ২৫১টি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে সাদাপাথরবাহী ৭টি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। ট্রাক থেকে ৬০ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়।
এদিকে গত শনিবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিনদিনের মধ্যে লুট হওয়া সাদাপাথর ফেরতের আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম। আজ সোমবার এ সময় শেষ হচ্ছে। নতুন করে গতকাল রোববার গোয়াইনঘাটের জাফলং জিরো পয়েন্টের পাথর ফেরত দিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে ক্রাশিং মিল, বসতবাড়ি কিংবা অন্য কোনো স্থানে জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া অবৈধভাবে সংরক্ষিত সব পাথর নিজ উদ্যোগে বল্লাঘাট মসজিদের নিচে নদীর পাড়ে ফেরত পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফেরত না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানিয়েছেন, গত শনিবার রাত থেকে পেলোডার দিয়ে ট্রাক থেকে পাথর নামানো ও নৌকায় লোড করে সাদাপাথর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে পুলিশ কাজ করছে। ইতোমধ্যে ১০-১১ লাখ ঘনফুট জব্দ এবং দশ দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ লাখ ঘনফুটেরও বেশি পাথর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
প্রধান সম্পাদক ঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন , নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন , বার্তা সম্পাদক ঃ মিসবাহ উদ্দিন
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225