০২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

শহরের চেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার গ্রামে বেশি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৩:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৭ বার পড়া হয়েছে।

শহর অঞ্চলের চেয়ে গ্রাম পর্যায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার বেশি। গ্রামের ৯৮ দশমিক ৩ শতাংশ খানা বা পরিবারে এক বা একাধিক মোবাইল ফোন আছে। এ হার শহরে ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ব্যক্তি পর্যায়েও গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ব্যক্তি এবং খানা পর্যায়ে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার জরিপ ২০২৪-২৫ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠেছে। সংস্থার ওয়েবসাইটে গতকাল মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

কেন শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার বেশি– এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, বিবিএস সাধারণত তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে তা পরিবেশন করে থাকে। সেভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই বিবিএসের। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন বিজনেসম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিতু সমকালকে বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে মোবাইল কেনার আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোন এখন একটা অপরিহার্য মাধ্যম। এ কারণে মোবাইল ফোনের ব্যবসাটা বেশ বাড়ছে। শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার হওয়ার একটা বড় কারণ হচ্ছে প্রবাসীদের তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এ কারণে গত কয়েক বছরে গ্রামে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়ছে।

ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির (আইসিটি) ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পেতে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পার্সোনাল ইন্টারভিউয়িং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে দেশের ৬১ হাজার ৬৩২টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এক্ষেত্রে পাঁচ বছর থেকে বেশি বয়সের মানুষকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তি বলতে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ফিক্সড ফোন, রেডিও, টেলিভিশন ও বিদ্যুতের ব্যবহারকে বোঝানো হয়েছে। এতে দেখা যায়, ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে দেশে। আগের অর্থবছরে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চেয়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে ১৩ শতাংশ। গত অর্থবছর দেশের ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে, যা আগের অর্থবছর ছিল ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্মার্টফোনের ব্যবহার গ্রামের চেয়ে শহরে বেশি। শহরের ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে। গ্রামীণ পর্যায়ে এ হার ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে কম্পিউটারের ব্যবহার গ্রামে অনেক কম। গ্রামে মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে কম্পিউটার আছে। শহরে এটি ২১ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেটের ব্যবহার আছে গ্রামের ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে। শহরে এ হার ৬৫ দশমিক ৪ শতাংশ।

কম্পিউটারের ব্যবহার এখনও যথেষ্ট কম। গত অর্থবছর দেশের ৯ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারে এর ব্যবহার ছিল। আগের অর্থবছরে যা ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ছে। গত অর্থবছর দেশের ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছিল ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। আগের অর্থবছর এ হার ছিল ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে ফিক্সড ফোনের ব্যবহার কমে দশমিক ৮ শতাংশে নেমেছে।

জরিপে প্রতিবেদনে দেখা যায়, পরিবারের বাইরে ব্যক্তি পর্যায়েও আইসিটির ব্যবহার বাড়ছে। ৯ শতাংশ ব্যক্তি কম্পিউটার ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনের মালিকানা আছে ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যক্তির। নিজস্ব মালিকানা না থাকলেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৮৮ দশমিক ২ শতাংশ ব্যক্তি। ব্যক্তি পর্যায়ে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কর্মসংস্থান বা অন্যান্য সামাজিক সূচকের মতো মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারীরা খুব বেশি পিছিয়ে নেই। দেশের ৮৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এর মধ্যে নারী ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং পুরুষ ৯০ দশমিক ৩ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। এ হার পুরুষের ক্ষেত্রে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

শহরের চেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার গ্রামে বেশি

আপডেট সময়ঃ ০৩:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

শহর অঞ্চলের চেয়ে গ্রাম পর্যায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার বেশি। গ্রামের ৯৮ দশমিক ৩ শতাংশ খানা বা পরিবারে এক বা একাধিক মোবাইল ফোন আছে। এ হার শহরে ৯৭ দশমিক ৭ শতাংশ। ব্যক্তি পর্যায়েও গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ব্যক্তি এবং খানা পর্যায়ে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার জরিপ ২০২৪-২৫ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠেছে। সংস্থার ওয়েবসাইটে গতকাল মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

কেন শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর হার বেশি– এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, বিবিএস সাধারণত তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে তা পরিবেশন করে থাকে। সেভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই বিবিএসের। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন বিজনেসম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিতু সমকালকে বলেন, গ্রামের মানুষের মধ্যে মোবাইল কেনার আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও মোবাইল ফোন এখন একটা অপরিহার্য মাধ্যম। এ কারণে মোবাইল ফোনের ব্যবসাটা বেশ বাড়ছে। শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার হওয়ার একটা বড় কারণ হচ্ছে প্রবাসীদের তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা। এ কারণে গত কয়েক বছরে গ্রামে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বাড়ছে।

ব্যক্তি ও খানা পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির (আইসিটি) ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পেতে জরিপটি পরিচালনা করা হয়। গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কম্পিউটার অ্যাসিস্টেড পার্সোনাল ইন্টারভিউয়িং (সিএপিআই) পদ্ধতিতে দেশের ৬১ হাজার ৬৩২টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এক্ষেত্রে পাঁচ বছর থেকে বেশি বয়সের মানুষকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

তথ্যপ্রযুক্তি বলতে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ফিক্সড ফোন, রেডিও, টেলিভিশন ও বিদ্যুতের ব্যবহারকে বোঝানো হয়েছে। এতে দেখা যায়, ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে দেশে। আগের অর্থবছরে গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চেয়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে ১৩ শতাংশ। গত অর্থবছর দেশের ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে, যা আগের অর্থবছর ছিল ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, স্মার্টফোনের ব্যবহার গ্রামের চেয়ে শহরে বেশি। শহরের ৮১ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে। গ্রামীণ পর্যায়ে এ হার ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ। তবে কম্পিউটারের ব্যবহার গ্রামে অনেক কম। গ্রামে মাত্র ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পরিবারে কম্পিউটার আছে। শহরে এটি ২১ দশমিক ৯ শতাংশ। ইন্টারনেটের ব্যবহার আছে গ্রামের ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবারে। শহরে এ হার ৬৫ দশমিক ৪ শতাংশ।

কম্পিউটারের ব্যবহার এখনও যথেষ্ট কম। গত অর্থবছর দেশের ৯ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারে এর ব্যবহার ছিল। আগের অর্থবছরে যা ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়ছে। গত অর্থবছর দেশের ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার স্মার্টফোন ব্যবহার করেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ। মোবাইল ফোনের ব্যবহার ছিল ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবারে। আগের অর্থবছর এ হার ছিল ৯৭ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে ফিক্সড ফোনের ব্যবহার কমে দশমিক ৮ শতাংশে নেমেছে।

জরিপে প্রতিবেদনে দেখা যায়, পরিবারের বাইরে ব্যক্তি পর্যায়েও আইসিটির ব্যবহার বাড়ছে। ৯ শতাংশ ব্যক্তি কম্পিউটার ব্যবহার করে। মোবাইল ফোনের মালিকানা আছে ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ ব্যক্তির। নিজস্ব মালিকানা না থাকলেও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ৮৮ দশমিক ২ শতাংশ ব্যক্তি। ব্যক্তি পর্যায়ে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেখা যায়, কর্মসংস্থান বা অন্যান্য সামাজিক সূচকের মতো মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নারীরা খুব বেশি পিছিয়ে নেই। দেশের ৮৮ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। এর মধ্যে নারী ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং পুরুষ ৯০ দশমিক ৩ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। এ হার পুরুষের ক্ষেত্রে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ।

নিউজটি শেয়ার করুন