বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা পণ্যগুলোর রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। রোববার (১৮ মে) সকাল থেকে ভারতের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি এই বন্দর থেকে। এদিন পণ্যবাহী ১১টি ট্রাক বন্দরে আটকা পড়ে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। এতে করে ওই স্থলবন্দরে রপ্তানিতে এক প্রকার অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
তবে রপ্তানি বন্ধ থাকার খবর ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা কোনো পণ্য বন্দরে পাঠাচ্ছেন না। ফলে রপ্তানিযোগ্য পণ্যবাহী কোনো গাড়ি সোমবার বন্দরে আটকা নেই বলে জানিয়েছেন শেওলা স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহবুব হাসান।
এদিকে ভারতের অনুমতি থাকায় সোমবার মেলামাইন পণ্যের একটি চালান রপ্তানির জন্য ভারতে প্রবেশ করেছে বলে জানা গেছে। শেওলা স্থলবন্দরের একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, রোববার রপ্তানির জন্য আসা বেশ কিছু পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে আটকা পড়ে। শুধু কেমিক্যাল পণ্যবাহী একটি ট্রাক শেওলা বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এরপর আজ আরও দুই ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এগুলো রপ্তানিতে ভারতের অনুমতি আছে বলে জানা গেছে।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) গত শনিবার (১৭ মে) এক নির্দেশনায় জানায়, বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসহ কয়েকটি পণ্য ভারতের নির্দিষ্ট কিছু স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম এবং পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে এসব পণ্যের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।
এতে করে বিপাকে পড়েছেন দেশের রপ্তানিকারকরা। অবশ্য ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দু’দেশের পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্তের কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে।
শেওলা স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এই বন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক সামগ্রী, ফার্নিচার, কোমল পানীয় ও ক্রোকারিজ পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হতো। কিন্তু ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে এসবের বেশিরভাগ পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি ভারত শেওলাসহ দেশের অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে রেডিমেড গার্মেন্টস, ফল, ফলের স্বাদযুক্ত এবং কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য (বেকড পণ্য, স্ন্যাকস, চিপস এবং মিষ্টান্ন), তুলা এবং সুতির বর্জ্য, প্লাস্টিক এবং পিভিসি তৈরি পণ্য এবং কাঠের আসবাবপত্র আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। যার কারণে শেওলা বন্দর দিয়ে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
শেওলা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শাহ আলম বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থলবন্দর ব্যবহার করেই বেশিরভাগ পণ্য রপ্তানি করে। এভাবে রপ্তানি বন্ধ থাকলে তাদের উৎপাদন কমতে হবে।
তিনি বলেন, ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সেগুলো খুবই কম পরিমাণে আমদানি করে। মূলত যেসব পণ্য বেশি আমদানি করে সেগুলোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তিনি আরও বলেন, রোববার রপ্তানি বন্ধ থাকায় পণ্যবাহী ১১টি ট্রাক বন্দরে আটকা পড়ে। তবে ভারতের ব্যবসায়ীরা কয়েক ট্রাক পণ্য আমদানির জন্য সেদেশের কাস্টমসের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবেদন দিয়েছেন বলে জানা গেছে। কারণ অনেক পণ্যের চালানের মূল্য তারা টিটি করে দিয়েছেন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে সেগুলো আমদানির চেষ্টা করছেন তারা।
শেওলা স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মাহবুব হাসান বলেন, ভারত যে পণ্যগুলোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেগুলো রপ্তানি হচ্ছে না। বন্দরের অন্যান্য সকল কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
© 2024 Sylhet21 All Rights Reserved. | Developed Success Life IT