সিলেট কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন এলাকার পাথর লুটের ঘটনায় প্রতিবেদন দিয়েছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। জড়িত ১৩৭ জনের নাম সংযুক্ত করে গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসকের কাছে সাত পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
পরে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পদ্মাসন সিংহ সাংবাদিকদের জানান, তারা বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে সুপারিশ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
পাথর লুটে জড়িতদের নামপরিচয় দিতে রাজি হননি তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তবে সিলেটে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর (বিএমডি) অফিস স্থাপন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা আগের অবস্থায় ফেরাতে পরিবেশবান্ধব বৃক্ষরোপণ, সংশ্লিষ্ট অংশীজন নিয়ে তদন্ত কমিটি, উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন, টাস্কফোর্সের অভিযান জোরদারসহ ১০ দফা সুপারিশ করার কথা জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্র ও ভোলাগঞ্জের রেলের জায়গা বাঙ্কার এলাকার পাথর উত্তোলনে ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে। কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ সচিব (সমবায় ও সংস্কার)। সদস্য থাকবেন জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন, বিএমডির অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি ও সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব)। কোনো কর্তৃপক্ষের অবহেলা আছে কিনা খতিয়ে দেখা এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশসহ ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া ১৩৭ জনের নাম প্রতিবেদনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে বিএনপি, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ নানা শেণি-পেশার মানুষের নাম রয়েছে। তারা কীভাবে পাথর লুট করেছেন, তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
গত ১২ আগস্ট জেলা প্রশাসন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে। কমিটির সদস্য হলেন– কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার ও সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম লিংকন। তদন্ত চলাকালে জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদকে ওএসডি এবং ইউএনওকে বদলি করা হয়।
সিলেটে তোলপাড়
দুদকের বরাত দিয়ে গতকাল সমকালে প্রকাশিত ‘সিলেটে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে জড়িত ৪২ জন’ শীর্ষক প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় চলছে। নেতাদের নাম থাকায় প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী কয়েস বলেন, ‘দুদকের বরাত দিয়ে কোনো অনুসন্ধান ছাড়াই সমকাল সংবাদ প্রকাশ করেছে। এতে আমরা আশ্চর্য হয়েছি। সাদাপাথরকাণ্ডে আমাদের কেউ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত নন।’ এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলকারীদের পক্ষে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের বিষয়ে বলেছিলাম। লুট করার কথা বলিনি।’
জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান ও মহানগর সেক্রেটারি শাহজাহান আলী প্রতিবাদলিপিতে বলেছেন, প্রতিবেদনে নগর আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম ও জেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনের নাম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়েছে। এর সঙ্গে জামায়াত নেতারা দূরে থাক, সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরও ন্যূনতম সম্পর্ক নেই।
এনসিপির জেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন শাহান ও মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিবাদলিপিতে দাবি করেছেন, পাথর লুটের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কেউ প্রমাণ দিতে পারলে, দল থেকে পদত্যাগ করবেন তারা।
প্রধান সম্পাদকঃ আবুবকর সিদ্দিক সুমন। নির্বাহী সম্পাদকঃ রুবেল হাসনাইন। বার্তা সম্পাদকঃ রুমি বরুয়া।
গুলশান, ঢাকা-১২১৬, বাংলাদেশ। ইমেইলঃ admin@sylhet21.com,sylhet21.com@gmail.com মোবাইলঃ +1586 665 4225
©২০২৫ সিলেট ২১ সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত। | Developed Success Life IT