সিলেটের ৭টি পাথর কোয়ারি হবে টেকসই ইকো-ট্যুরিজম: হাইকোর্টের নির্দেশ

- আপডেট সময়ঃ ০৯:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
- / ৩৭ বার পড়া হয়েছে।

হাইকোর্ট বিভাগ সিলেটের ৭টি পাথর কোয়ারি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত আদেশ দেন। এদিন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক দায়েরকৃত জনস্বার্থমূলক রিট মামলার (নং ১৩৪৮৫/২০২৫) প্রাথমিক শুনানি শেষে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
আদালতের আদেশে সিলেট জেলার ৭টি (জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি ও লোভাছড়া) পাথর কোয়ারির নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালত বিবাদীগণের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতাকে কেন অসাংবিধানিক, অবৈধ ও জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে এসব কোয়ারিকে কেন ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধ উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না—তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
আদালত খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার এবং সিলেট জেলা প্রশাসককে আগামী ৩ মাসের মধ্যে পরিবেশবান্ধব ইকো-ট্যুরিজম বিকাশের জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন ও আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
এছাড়া, পাথর উত্তোলন সংক্রান্ত পূর্ববর্তী প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের আলোকে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিলেট জেলার উল্লিখিত কোয়ারিসহ অন্যান্য স্থান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি ও প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে আগামী শুনানিতে আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে বর্তমান পর্যন্ত পাথর উত্তোলন বিষয়ে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার নির্দেশও দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ৫১টি এলাকাকে পাথরসমৃদ্ধ অঞ্চল ঘোষণা করে। পরিবেশগত ক্ষতির কারণে ২০২০ সালে সব কোয়ারি থেকে উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে ২০২৫ সালে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হলে সিলেট ও অন্যান্য এলাকায় নির্বিচারে পাথর উত্তোলন শুরু হয়। এ অবস্থায় বেলা রিট দায়ের করে।
মামলায় বিবাদী ছিলেন ভূমি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, পরিবেশ, স্বরাষ্ট্র, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিবগণ; পরিবেশ অধিদপ্তর, খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট ও বান্দরবনের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
বেলা’র পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এডভোকেট মিনহাজুল হক চৌধুরী, তাঁকে সহযোগিতা করেন এডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার।