সিলেটে ৩ দিনে চার লাখ ফুট পাথর উদ্ধার

- আপডেট সময়ঃ ০২:৫৭:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
- / ৫১ বার পড়া হয়েছে।

সিলেটের সাদা পাথর থেকে লুট হওয়া পাথর লুকাচ্ছে পাথরখেকোরা। কেউ লুকিয়ে রাখছে মাটির নিচে, আবার কেউ দিচ্ছে বালু চাপা। কিন্তু এতেও রেহাই পাচ্ছেন না তারা। গত তিনদিনে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ফুট পাথর। সিলেটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে এ পাথর উদ্ধার করে। অভিযানে ভয়ে আছে পাথরখেকোরা। এজন্য মাটি ও বালুর নিচে পাথর লুকানোর হিড়িক পড়েছে। সদর উপজেলার ধুপাগুলের মহালদিক গ্রাম থেকে আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনুর রুবাইয়াতের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী এই পাথর জব্দ করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকার মামুনুর রশীদসহ সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসার বাহিনী ও প্রশাসনের অন্যান্য সদস্যরা। সকাল থেকে ধুপাগুলের বিভিন্ন ক্রাশার মিল, মহালদি গ্রামে লুকিয়ে রাখা আড়াই লাখ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়। বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৪ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়। জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ জানান, জব্দকৃত পাথরগুলো সাদা পাথরের প্রতিস্থাপন করা হবে।
সাদা পাথর লুটের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ রাতভর অভিযান পরিচালনা করে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান। এর আগে শুক্রবার রাতে ১৫শ’ থেকে ২ হাজার জনকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ারুল হাবীব। জাফলংয়ে অভিযান: জাফলং থেকে লুট হওয়া পাথরের আরও একটি অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার দিনে ও রাতে এ অভিযান চালানো হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে পরিচালিত যৌথ অভিযানে পাথরগুলো উদ্ধার করে আবার প্রতিস্থাপন করা হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও গোয়াইনঘাট থানার ওসি। সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর ও গোয়াইনঘাটের জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন ও লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন। এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব পুলিশসহ যৌথ বাহিনী।
বুধ ও বৃহস্পতিবার সাদা পাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের একটা অংশ উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে জাফলং জিরো পয়েন্ট ও আশপাশ এলাকা থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে ২ হাজার ঘনফুট উদ্ধার করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় গত শুক্রবার গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন স্থানে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। তারা বিভিন্ন স্থান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৫ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হন। পাথরগুলো উদ্ধার করে জাফলং জিরো পয়েন্ট ও আশাপাশ এলাকায় প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী। তিনি জানান, সাদা পাথরের তুলনায় জাফলংয়ে লুটপাট কম হয়েছে। তবে যা হয়েছে অভিযান চালিয়ে তা উদ্ধার ও প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র জাফলং তার সৌন্দর্য ধরে রেখেছে। যদিও পাথর লুটের ঘটনা একটা ক্ষত সৃষ্টি করেছে। তিনি সাংবাদিকসহ দেশের প্রকৃতিপ্রেমীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাফলং ঘুরতে আসুন। আপনারা নিরাশ হবেন না। পাশাপাশি আমাদের প্রচেষ্টা বা তৎপরতাও দেখে যাবেন। তিনি জানিয়েছেন, কোনো ক্রাশার মিলে লুট হওয়া পাথর রাখা হয়নি। তবু সেগুলো নজরদারিতে আছে। পাথর পাওয়া গেলে উদ্ধারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
র্যাবের অভিযান: জৈন্তাপুর উপজেলার আসাম পাড়া এলাকায় র্যাব-৯ এর টহল টিম, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বিভিন্ন ক্রাশার মিলসহ আশপাশের এলাকায় এ পাথর পাওয়া যায়।