হবিগঞ্জের লক্ষ্মী বাঁওড় হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট

- আপডেট সময়ঃ ১২:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
- / ৪৪ বার পড়া হয়েছে।

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার লক্ষ্মী বাঁওড় বা সোয়াম্প ফরেস্ট হতে পারে আকর্ষণীয় একটি পর্যটন স্পট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর পাখির কিচিরমিচির শব্দে আপ্লুত না হয়ে উপায় নেই। সৌন্দর্যে ভরপুর এই বন স্থানীয়দের কাছে খড়তির জঙ্গল নামে পরিচিত।
হবিগঞ্জ শহর থেকে ১৭ মাইল পর বানিয়াচং আদর্শ বাজার থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটারের পথ অতিক্রম করলেই লক্ষ্মী বাঁওড় বনে পৌঁছে যাওয়া যায়।
স্থানীয়রা জানান, কখন এই খড়তির জঙ্গল সৃষ্টি হয়েছে তা প্রবীণরাও বলতে পারেন না। এখানে প্রকৃতির এই বিচিত্র রূপ সত্যিই বিস্ময়কর। বর্ষাকালে চারদিকে হাওরের পানি আর জঙ্গলের অসংখ্য গাছপালার সবুজ অরণ্য পরিবেশকে এক নান্দনিক রূপ দিয়েছে। দূর থেকে জঙ্গলটিকে দেখে মনে হবে যেন পানির ওপর ভাসছে। হিজল, করচ, বরুণ, কাকুরা, খাগড়া, নল ইত্যাদি অসংখ্য গাছে পরিপূর্ণ এই বন। বর্ষাকালে থইথই করা পানি থাকলেও শরৎকালে একদম শুকিয়ে যায়।
বর্ষায় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত টমটম নিয়ে লক্ষ্মী বাওড়ের সৌন্দর্য দেখতে যান পর্যটকরা। দুটি ঈদে পর্যটকদের ভিড় থাকে বেশি।
সাড়ে ৩ কিলোমিটার বিশাল আয়তনের এই বনে বর্ষাকালে কয়েক মাস গাছপালা পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বনের ভেতরে কয়েকটি খাল ও বিল রয়েছে। শরৎকালে পানি শুকিয়ে গেলেও বনের ভেতরে থাকা অনেকগুলো বিলে পানি জমে থাকে। বিলগুলোতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়।
এই বনে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরীসৃপ ও স্তন্যপায়ী জীবজন্তুর সাক্ষাৎ মেলে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মেছোবাঘ, শিয়াল, গুইসাপ, কেউটে, লাড্ডুকা, দারাইশসহ বিষধর সাপ। বর্তমানে বিভিন্ন জাতের বক, পানকৌড়ি, বালিহাঁস দেখা গেলেও শীতকালে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় নির্জন এই বন। বনটিকে দেশি ও অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
বনে জলরাশির বুকে মনোরম পরিবেশে জেগে আছে একটি রেস্টহাউস। ২ কক্ষবিশিষ্ট এই রেস্টহাউসে আছে দুটি বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুম। যাতে করে পর্যটকরা বিশ্রাম ও শৌচকর্ম করতে পারেন। ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পর্যটন করপোরেশনের অর্থায়নে রেস্টহাউসটি নির্মাণ করা হয়। এর তত্ত্বাবধানে বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন।
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম সাথী বলেন, লক্ষ্মী বাঁওড় বা সোয়াম্প ফরেস্ট বানিয়াচংয়ের একটি অন্যতম পর্যটন স্পট। পর্যটকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেদিকে প্রশাসনের নজর রয়েছে।