০২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

১০ জুলাইয়ের মধ্যে সংগঠনগুলোকে কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ শাবিপ্রবি প্রশাসনের

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
  • আপডেট সময়ঃ ১০:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • / ৩ বার পড়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ব্যবহৃত বরাদ্দকৃত কক্ষগুলো বাতিল করে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে কক্ষ খালি করার নির্দেশ দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, “ইউনিভার্সিটি সেন্টারের যে সব কক্ষ আপনাদের সংগঠনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬৮টি সংগঠন রয়েছে। সকল সংগঠনকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন হলেও পর্যাপ্ত কক্ষের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আপনাদের সংগঠনের নামে বরাদ্দকৃত কক্ষগুলো আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে খালি করার জন্য অনুরোধ করা হলো।”

চিঠির শেষাংশে আরও বলা হয়, “সকল সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।” তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি অন্তিক চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “সাস্টের জন্মের পর থেকে ৩ দশকের বেশি সময় ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিলে তিলে গড়ে তোলা ক্লাবগুলোকেই কোনও ধরণের আলোচনা ছাড়াই ক্লাবরুম ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লজ্জা-লজ্জা, লজ্জা।”

মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদের সভাপতি সাদিয়া আনজুম শৌমি বলেন, “আমরা সংগঠনের সূচনালগ্ন থেকেই ইউসিতে একটি রুম ব্যবহার করে আসছি। বহু বছর ধরে এই কক্ষে মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই কক্ষে রয়েছে বিভিন্ন বই নিয়ে গড়ে ওঠা ‘মাহিদ আল সালাম স্মৃতি লাইব্রেরি’। আমরা কি তাহলে এই লাইব্রেরি বন্ধ করে দেব? প্রশাসন কি তাই চায়?”

তিনি আরও বলেন, “এই কক্ষ ত্যাগ মানে আমাদের কার্যক্রমে স্থবিরতা আনা। এটি শুধু একটি রুম নয়—আমাদের সাংগঠনিক ঐতিহ্যের অংশ। এমন সিদ্ধান্ত সংগঠনগুলোর প্রতি একধরনের অবিচার, এবং এটি সচেতনভাবে সাংগঠনিক ক্ষতি করার সামিল।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮টি সংগঠন রয়েছে, কিন্তু ইউনিভার্সিটি সেন্টারের গুটিকয়েক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে কিছু রুম ব্যবহার করছে। এতে বাকি সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের জায়গা হচ্ছে না। আমরা তো নির্দিষ্ট কয়েকটি সংগঠনকে সুযোগ দিয়ে বাকিদের বঞ্চিত রাখতে পারি না। সবাইকে সুযোগ করে দিতেই কক্ষ খালি করতে বলা হয়েছে।”

তবে আলোচনা ছাড়াই কক্ষ খালি করতে বলার বিষয়ে তিনি বলেন, “সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমাদের কথা হবে। আমরা শুধু জানিয়ে দিলাম। তারা আমাদের সঙ্গে বসুক, কথা হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

১০ জুলাইয়ের মধ্যে সংগঠনগুলোকে কক্ষ ছাড়ার নির্দেশ শাবিপ্রবি প্রশাসনের

আপডেট সময়ঃ ১০:৫৯:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ব্যবহৃত বরাদ্দকৃত কক্ষগুলো বাতিল করে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দকে কক্ষ খালি করার নির্দেশ দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, “ইউনিভার্সিটি সেন্টারের যে সব কক্ষ আপনাদের সংগঠনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করা হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬৮টি সংগঠন রয়েছে। সকল সংগঠনকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন হলেও পর্যাপ্ত কক্ষের অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আপনাদের সংগঠনের নামে বরাদ্দকৃত কক্ষগুলো আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে খালি করার জন্য অনুরোধ করা হলো।”

চিঠির শেষাংশে আরও বলা হয়, “সকল সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য আপনাদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছি।” তবে এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি অন্তিক চৌধুরী এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “সাস্টের জন্মের পর থেকে ৩ দশকের বেশি সময় ধরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিলে তিলে গড়ে তোলা ক্লাবগুলোকেই কোনও ধরণের আলোচনা ছাড়াই ক্লাবরুম ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লজ্জা-লজ্জা, লজ্জা।”

মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদের সভাপতি সাদিয়া আনজুম শৌমি বলেন, “আমরা সংগঠনের সূচনালগ্ন থেকেই ইউসিতে একটি রুম ব্যবহার করে আসছি। বহু বছর ধরে এই কক্ষে মাভৈঃ আবৃত্তি সংসদ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই কক্ষে রয়েছে বিভিন্ন বই নিয়ে গড়ে ওঠা ‘মাহিদ আল সালাম স্মৃতি লাইব্রেরি’। আমরা কি তাহলে এই লাইব্রেরি বন্ধ করে দেব? প্রশাসন কি তাই চায়?”

তিনি আরও বলেন, “এই কক্ষ ত্যাগ মানে আমাদের কার্যক্রমে স্থবিরতা আনা। এটি শুধু একটি রুম নয়—আমাদের সাংগঠনিক ঐতিহ্যের অংশ। এমন সিদ্ধান্ত সংগঠনগুলোর প্রতি একধরনের অবিচার, এবং এটি সচেতনভাবে সাংগঠনিক ক্ষতি করার সামিল।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮টি সংগঠন রয়েছে, কিন্তু ইউনিভার্সিটি সেন্টারের গুটিকয়েক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে কিছু রুম ব্যবহার করছে। এতে বাকি সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের জায়গা হচ্ছে না। আমরা তো নির্দিষ্ট কয়েকটি সংগঠনকে সুযোগ দিয়ে বাকিদের বঞ্চিত রাখতে পারি না। সবাইকে সুযোগ করে দিতেই কক্ষ খালি করতে বলা হয়েছে।”

তবে আলোচনা ছাড়াই কক্ষ খালি করতে বলার বিষয়ে তিনি বলেন, “সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমাদের কথা হবে। আমরা শুধু জানিয়ে দিলাম। তারা আমাদের সঙ্গে বসুক, কথা হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন