বিয়ানীবাজারে নার্সের হাতে সন্তান প্রসবের চেষ্টা, নবজাতকের মৃত্যু

- আপডেট সময়ঃ ১১:০৭:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ৬০ বার পড়া হয়েছে।

বিয়ানীবাজারে নব প্রতিষ্ঠিত একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসক ছাড়াই নার্সের হাতে সন্তান প্রসবের চেষ্টাকালে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার দুপুরে বিয়ানীবাজার পৌর শহরের দক্ষিন বাজারের করিম বার্সেলোনা টাওয়ারের মা ও শিশু হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শনিবার সকালের দিকে অন্তঃগর্ভা নারীকে নিয়ে বিয়ানীবাজার মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন তার স্বজনরা। অন্ত:সত্তা নারী গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের আমকোনা গ্রামের প্রবাসী আব্দুল হামিদের স্ত্রী। নিহত নবজাতক শিশুটি ছিল তার তৃতীয় সন্তান।
রোগীর স্বজনেরা জানান, দুপুর বেলার সময় রোগীর প্রসব ব্যথা বেশি ওঠে। হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্তরা হাসপাতালে রোগীর ভর্তি নিয়ে গড়িমসি করেন। এসময় তাদের হাসপাতালে অবিজ্ঞ কোনো ডাক্তার না থাকার বিষয়টি আড়াল করেন। পরিক্ষার রিপোর্টে নর্মাল ডেলিভারির কথা বলেন তারা। দুপুরে প্রসূতির প্রচন্ড ব্যাথা উঠলে তখন হাসপাতালে চিকিৎসক ছিলেন না। পরে একজন অদক্ষ নার্স দিয়ে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেন। অনেকক্ষণ চেষ্টার পর সন্তান মৃত ভূমিষ্ট হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, নার্সের ভুলের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। নার্স টানাহেঁচড়া করে সন্তান ভূমিষ্ঠ করার চেষ্টা করেন। এতে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
তারা বলেন, ‘বারবার ডাক্তারকে খবর দেওয়ার জন্য বলেছি। কিন্তু কোনো ডাক্তার আসেনি। একজন নার্স ও একজন অনবিজ্ঞ চিকিৎসক মিলে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেছে।
প্রসুতি নারীর চাচাতো ভাই ছামী দাবী, অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়াই হাসপাতালের অদক্ষ নার্স দিয়ে জোর করে শিশুকে ডেলিভারি চেষ্টা করেন তারা। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতেও কোনো প্রসুতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে রোগীর পেটে চাপ দিলে নবজাতকের মাথা অর্ধেক বের হয় এবং মাথা ধরে দীর্ঘক্ষণ টানা হয় যে কারনে নবজাতকের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার পরবর্তীতে আসার পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় আবাসিক সার্জন আসলে মৃত শিশুর জন্ম হয়।
অভিযোগের ব্যাপারে হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম সালেকিন বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবহেলার ঘটনা থাকলে তাঁর জানা নেই, মিডওয়াইফ প্রথমে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করেন। একসময় তার সহযোগীতা চাইলে তিনি গিয়ে সহযোগীতা করেন, এসময় রোগীর কাছ থেকে চাপ কমে যাওয়ায় নবজাতকটি অর্ধেকে আটকে যায়। বিষয়টি আবাসিক সার্জনকে জানালে তিনি এসে ব্যবস্থা নেন।
বিয়ানীবাজার মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক আমিনুল ইসলাম শাকিল বলেন, ঘটনাটি অনাকাংঙ্খিত, আমরা এবিষয়ে রাতেই তদন্ত সাপেক্ষে হাসপাতালের কারো অবহেলা পেলে তড়িৎ ব্যবস্থা নিবো।
বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ উজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়েছি এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’