বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ: বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন প্রার্থীরা

- আপডেট সময়ঃ ০৯:২৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ৫১ বার পড়া হয়েছে।

বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ (সিলেট-৬) আসনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা হাইকমান্ডের সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রয়েছেন। দলের ১০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী পৃথকভাবে এলাকায় গণসংযোগ চালালেও বর্তমানে আলোচনায় রয়েছেন মাত্র ৩–৪ জন। শর্টলিস্ট খবর চাউর হয়ে যাওয়ায় প্রার্থীদের অনেকেই কিছুটা চুপসে গেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অক্টোবরের মধ্যভাগে কিংবা মাসের শেষ নাগাদ দলীয় হাইকমান্ড প্রতিটি আসনে একজন করে সম্ভাব্য প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বিজয়ী হওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করে তফসিল ঘোষণার পর দলীয় মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্তভাবে প্রার্থী নির্ধারণ করবে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতারা জানান, মাঠপর্যায়ে গতি আনতেই সুনির্দিষ্ট প্রার্থীকে আগেভাগে প্রস্তুতির সুযোগ দিতে চায় দল। মনোনয়ন নির্ধারণে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যাঁরা মনোনয়নপ্রত্যাশী, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, একাদশ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, চিত্রনায়ক হেলাল খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অহিদ আহমদ, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম কমর উদ্দিনের কন্যা সাবিনা খান, সাবেক সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার কন্যা সৈয়দা আদিবা হোসেন এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা আনোয়ার হোসেন।
সাম্প্রতিক কয়েকদিনে প্রত্যাশী প্রার্থীদের অনুসারী কিছু নেতাকর্মী দাবি করছেন, তাঁদের প্রার্থী সবুজ সংকেত পেয়েছেন। যদিও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দলীয়ভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের প্রচারণায় সরব রয়েছেন। স্থানীয়ভাবে উঠান বৈঠক, তৃণমূল সভা, উন্নয়নমূলক আলোচনা সভা, দরিদ্রদের সহায়তা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণসহ সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হচ্ছেন অনেকে। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সক্রিয় প্রচারণা চালাচ্ছেন তাঁরা। দলীয় নেতৃত্বের নজরে আসতে প্রত্যেকে তুলে ধরছেন নিজেদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, ত্যাগ ও জনসম্পৃক্ততার দিক।
ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘২০১৮ সালে দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। মাত্র দুই ঘণ্টায় লক্ষাধিক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু সরকার আসন ছিনিয়ে নেয়। এবারও দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি বিশ্বাস করি, জনগণের ভালোবাসাই রাজনীতির প্রকৃত শক্তি।’ড. এনামুল হক চৌধুরী বলেন,
‘তৃণমূল থেকে উঠে এসেছি, জেল-জুলুম সহ্য করেছি। বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জের জনগণের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। ধানের শীষের পক্ষে মাঠে সক্রিয় আছি।’
আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেন,‘১৭ বছর প্রতিকূল পরিস্থিতিতে রাজনীতি করেছি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন, আমি সে স্বপ্নের অংশীদার হতে চাই।’
অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন,‘এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি সবসময়। তৃণমূলে সংযোগ জোরদার করছি। আশা করছি, দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’
দলীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ আসনে বিএনপির তৃণমূল এখন বেশ সক্রিয়। দীর্ঘদিন পর আবারও নির্বাচনী প্রস্তুতিতে নেতাকর্মীদের মধ্যে স্পষ্ট উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে আসনটি নিয়ে বিএনপির ভেতরে প্রতিযোগিতা যেমন তীব্র, তেমনি প্রত্যাশাও অনেক।