০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

দুর্ভোগে সিলেটবাসী, পর্যবেক্ষণে ডিসি

স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময়ঃ ০২:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
  • / ৯ বার পড়া হয়েছে।

বড় ধরনের দুর্ভোগের মুখে পড়তে যাচ্ছেন সিলেটবাসী। অবশ্য ইতিপূর্বে সেই দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। অনেক আগে থেকে ঘোষণা বা হুমকি ধমকি এলেও সার্বিক বিষয় এখনো পর্যবেক্ষণ করছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক।

দুর্ভোগের কারণ, ৪৮ ঘন্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের পর অনিদিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বানে মঙ্গলবার থেকে এই কঠোর আন্দোলন শুরু হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য।

সিলেটের আর কোনো কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হবেনা- সম্প্রতি সিলেট সফরে এসে এমন একটা ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ঘোষণার পরপরই তিনি মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন। জাফলংয়ে তার গাড়ি বহর অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপরই ফুঁসে উঠেন সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক ও শ্রমিকসহ তাদের শুভাকাঙ্খীরা। তারা লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিতে থাকেন। দাবি ঐ একটাই, পাথর কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।

এই দাবিতেই তারা সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে তিন দফা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

প্রথম দুই দফা ছিল, ২৮ জুন থেকে টানা ৪৮ ঘন্টা সিলেটের সব পাথর কোয়ারি ও লোড আনলোড পয়েন্টে কর্মবিরতি, পরের ৪৮ ঘন্টা ছিল পণ্য পরিবহন শ্রমিক ও চালকদের কর্মবিরতি। এ দুই দফার আন্দোলন শেষ হয় গত ২ জুলাই।

এরপর থেকে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা থাকলেও আন্দোলনকারীরা কিছুটা পিছিয়ে আসেন। তারা ঘোষণা দেন, ৮ জুলাই থেকে সিলেটজুড়ে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের।

৭ জুলাই সিলেট সফরে আসছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সম্মানে শ্রমিকরা ওই দিন পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটে না গিয়ে কেবল পণ্য পরিবহণে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। আর ৮ তারিখ থেকে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘট চলবে বলেও ঘোষণা করেন তারা।

অবশ্য পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন পরে পাঁচ দফায় গড়ায়। তবে সেই পাঁচদফা থেকে জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবি থেকে তারা সরে এসেছেন। এই দাবির জায়গায় তাদের নতুন দাবি বিআরটিএ অফিসে শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা। এমনটাই জানালেন সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া।

অপর দফাগুলো হচ্ছে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ, ক্রাশার মেশিন ধ্বংস না করা, ও পাথর পরিবহনে নিযুক্ত ট্রাক চলাচলে বাধা না দেওয়া ইত্যাদি।

প্রায় দু’সপ্তাহ আগে থেকে আন্দোলনের হুমকি, তারপর আন্দোলন শুরু করে প্রথম দুই ধাপ অতিক্রম করার পর এখন চূড়ান্ত ধাপ সিলেট জেলাজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট। ৮ জুলাই থেকে তারা সেটাই শুরু করতে যাচ্ছেন বলে জানালেন দিলু মিয়া, পরিবহন শ্রমিক নেতা ময়নুল ইসলাম।

একই ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম ও সদস্য আলী আহমদ আলী।

এমন কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি যখন মালিক বা শ্রমিক পক্ষের, তখন সিলেটের জেলা প্রশাসন কি করছে? আন্দোলন স্থগিত বা বন্ধে কোনো আলাপ আলোচনা হলো কি না এনিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সচেতন মহলে।

তবে কোনো আলাপ আলোচনার খবর না পাওয়া গেলেও জানা গেল, সার্বিক পরিস্থিতির প্রতি তারা নজর রেখেছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি। আলাপ আলোচনার উদ্যোগ আছে কি না, সে প্রসঙ্গে তিনি আর কিছু বলেন নি।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

দুর্ভোগে সিলেটবাসী, পর্যবেক্ষণে ডিসি

আপডেট সময়ঃ ০২:৪৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

বড় ধরনের দুর্ভোগের মুখে পড়তে যাচ্ছেন সিলেটবাসী। অবশ্য ইতিপূর্বে সেই দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। অনেক আগে থেকে ঘোষণা বা হুমকি ধমকি এলেও সার্বিক বিষয় এখনো পর্যবেক্ষণ করছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক।

দুর্ভোগের কারণ, ৪৮ ঘন্টার পণ্য পরিবহন ধর্মঘটের পর অনিদিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বানে মঙ্গলবার থেকে এই কঠোর আন্দোলন শুরু হবে অনির্দিষ্টকালের জন্য।

সিলেটের আর কোনো কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হবেনা- সম্প্রতি সিলেট সফরে এসে এমন একটা ঘোষণা দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ঘোষণার পরপরই তিনি মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েন। জাফলংয়ে তার গাড়ি বহর অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপরই ফুঁসে উঠেন সিলেটের পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক ও শ্রমিকসহ তাদের শুভাকাঙ্খীরা। তারা লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিতে থাকেন। দাবি ঐ একটাই, পাথর কোয়ারিগুলো থেকে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।

এই দাবিতেই তারা সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে তিন দফা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

প্রথম দুই দফা ছিল, ২৮ জুন থেকে টানা ৪৮ ঘন্টা সিলেটের সব পাথর কোয়ারি ও লোড আনলোড পয়েন্টে কর্মবিরতি, পরের ৪৮ ঘন্টা ছিল পণ্য পরিবহন শ্রমিক ও চালকদের কর্মবিরতি। এ দুই দফার আন্দোলন শেষ হয় গত ২ জুলাই।

এরপর থেকে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা থাকলেও আন্দোলনকারীরা কিছুটা পিছিয়ে আসেন। তারা ঘোষণা দেন, ৮ জুলাই থেকে সিলেটজুড়ে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘটের।

৭ জুলাই সিলেট সফরে আসছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার সম্মানে শ্রমিকরা ওই দিন পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘটে না গিয়ে কেবল পণ্য পরিবহণে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেন। আর ৮ তারিখ থেকে লাগাতার পরিবহন ধর্মঘট চলবে বলেও ঘোষণা করেন তারা।

অবশ্য পাথর কোয়ারি সচলের দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন পরে পাঁচ দফায় গড়ায়। তবে সেই পাঁচদফা থেকে জেলা প্রশাসকের অপসারণের দাবি থেকে তারা সরে এসেছেন। এই দাবির জায়গায় তাদের নতুন দাবি বিআরটিএ অফিসে শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা। এমনটাই জানালেন সিলেট জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া।

অপর দফাগুলো হচ্ছে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ, ক্রাশার মেশিন ধ্বংস না করা, ও পাথর পরিবহনে নিযুক্ত ট্রাক চলাচলে বাধা না দেওয়া ইত্যাদি।

প্রায় দু’সপ্তাহ আগে থেকে আন্দোলনের হুমকি, তারপর আন্দোলন শুরু করে প্রথম দুই ধাপ অতিক্রম করার পর এখন চূড়ান্ত ধাপ সিলেট জেলাজুড়ে পরিবহন ধর্মঘট। ৮ জুলাই থেকে তারা সেটাই শুরু করতে যাচ্ছেন বলে জানালেন দিলু মিয়া, পরিবহন শ্রমিক নেতা ময়নুল ইসলাম।

একই ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি নাজির আহমদ স্বপন, সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. দিলু মিয়া, সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরি কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম ও সদস্য আলী আহমদ আলী।

এমন কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতি যখন মালিক বা শ্রমিক পক্ষের, তখন সিলেটের জেলা প্রশাসন কি করছে? আন্দোলন স্থগিত বা বন্ধে কোনো আলাপ আলোচনা হলো কি না এনিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সচেতন মহলে।

তবে কোনো আলাপ আলোচনার খবর না পাওয়া গেলেও জানা গেল, সার্বিক পরিস্থিতির প্রতি তারা নজর রেখেছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছি। আলাপ আলোচনার উদ্যোগ আছে কি না, সে প্রসঙ্গে তিনি আর কিছু বলেন নি।

নিউজটি শেয়ার করুন