রাজধানী ঢাকার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে।

- আপডেট সময়ঃ ০১:৪৮:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / ৫ বার পড়া হয়েছে।

রাজধানী ঢাকার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। আর তা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দুই সিটি কর্পোরেশন। মূলত জনবল সঙ্কটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে দুই সিটি করপোরেশন প্রতিদিন ময়লা সংগ্রহ করছে আট লাখ টন। তার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে তিন হাজার ৯০০ মেট্রিক টন বর্জ্য, আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। কিন্তু ওই বিশাল বর্জ্য সংগ্রহে প্রয়োজনের তুলনায় জনবল অনেক কম। ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমস্যা হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরিচ্ছন্নতাকর্মী দিয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটি করপোরেশনে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হচ্ছে। অথচ রাজধানী ঢাকায় প্রায় আড়াই কোটি মানুষের বসবাস। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের দাবি, মাত্র ২০ শতাংশ জনবল দিয়ে পুরো কাজ সামাল দিতে হচ্ছে। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মতে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত অন্তত এক হাজার কর্মী প্রয়োজন। পাশাপাশি বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ ও স্থানান্তর কেন্দ্র (এসটিএস) প্রকল্পেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি নেই। ফলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলা ক্রমেই বাড়ছে।সূত্র জানায়, ইতিপূর্বে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়ররা বিগত বছরগুলোতে ক্লিন ঢাকা গড়ার ঘোষণা দিলেও তা বাস্তব রূপ পায়নি। ফলে এখনো রাজধানীতে যত্রতত্র উন্মুক্ত স্থানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকে। এ ছাড়া বাসাবাড়ির ময়লা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়। রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশাল, শহীদনগর, লালবাগ, বেড়িবাঁধ, আজিমপুর, খিলগাঁও, বাসাবোসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কের পাশে ময়লা পড়ে থাকে। আগারগাঁও, পল্লবী, মিরপুরসহ উত্তরের কিছু এলাকার আশপাশেও ময়লা-আবর্জনা জমে থাকতে দেখা যায়। শহীদনগর ৩ নম্বর থেকে ৭ নম্বর গলির ভেতরে ময়লায় হাঁটার মতো অবস্থাও নেই। ময়লা সংগ্রহকারীর ভ্যানগুলো প্রতিদিন না আসায় অনেকেই ময়লা জমে গেলে রাস্তায় ফেলে যায়। একই অবস্থা দয়াগঞ্জ, ইংলিশ রোড, পুরান ঢাকাসহ ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন স্থানে।
সূত্র আরো জানায়, ডিএসসিসির ১০ অঞ্চলে ৩৪৪ জন স্কেলভুক্ত এবং চার হাজার ৬০৬ জন দৈনিক মজুরিভিত্তিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী রয়েছে। তবে উত্তরে এই সংখ্যা আরো কম। মাত্র দুই হাজার ৫০৮ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাজ করেন। বিগত সরকারের আমলে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই ক্লিন ঢাকা গড়তে রাসস্তর পাশে মিনি ওয়েস্টবিন স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। কিন্তু কিছু স্থাপন করলেও কিছুদিন পর তা উধাও হয়ে যায়। একই সঙ্গে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপনেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল এবং কিছু এসটিএস নির্মাণও করেন। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটির ৫৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২টি ওয়ার্ডে এসটিএস নির্মাণ করেছে। আর বাকি ২২টি ওয়ার্ডে বর্জ্য অপসারণ করার মতো ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি ৭৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৪টিতে এসটিএস নির্মাণ করেছে। বাকি ১১টি ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে উন্মুক্ত স্থান। সব মিলিয়ে দুই সিটির ৩৩ ওয়ার্ডে সেকেন্ডারি বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি।
এদিকে এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া জানান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় লাকবল সংকট তো রয়েছেই। নিয়োগের একটি উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশন বন্ধ থাকায় তার অগ্রগতি হয়নি। তাছাড়া চাইলেই নিয়োগ দেয়া যায় না। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে নিয়োগ দিতে হয়। ময়লা ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন সেক্টরে পর্যালোচনা করে তারপর মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।