শ্রীমঙ্গলে পাওনা টাকার জন্য কলেজছাত্রকে হত্যা

- আপডেট সময়ঃ ১০:৪৯:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / ৬৯ বার পড়া হয়েছে।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আলোচিত চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র হৃদয় আহমেদ ইয়াছিন (১৯) হত্যার আট দিনের মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন কিশোরগঞ্জের দাড়িয়াকান্দি এলাকার কাজল মিয়া (২০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিরাজুল ইসলাম (২১)।
সোমবার(১৪ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নোবেল চাকমা ও শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিহত হৃদয় কমলগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন এবং ওয়াইফাই অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হয়ে তিনি বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে দেনায় জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন।
গত ৭ জুলাই সকালে শ্রীমঙ্গলের কাকিয়াছড়া চা-বাগানে এক গাছের নিচে গলায় বেল্ট পেঁচানো অবস্থায় হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়। পরে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে একটি বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তদন্তে অগ্রগতি আসে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জবানবন্দিতে জানা যায়, ভিকটিম হৃদয়ের কাছে তাদের প্রায় ২২ হাজার টাকা পাওনা ছিল। পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তারা হৃদয়কে পরিকল্পিতভাবে চা-বাগানে নিয়ে গিয়ে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে গাছে ঝুলিয়ে রাখে, যেন ঘটনাটি আত্মহত্যা মনে হয়। হত্যার পর তারা তার মোবাইল ফোন মাত্র ২৫০ টাকায় বিক্রি করে মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার বলেন, খুনিরা প্রযুক্তি সম্পর্কে এতটাই ওয়াকিবহাল ছিল যে তারা কোনো ক্লু রেখে যায়নি। এই ঘটনা উদ্ঘাটনে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা রিপোর্টের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়।
গত ৭ জুলাই শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট ইউনিয়নের কাকিয়াছড়া চা-বাগান থেকে গাছের সঙ্গে ঝুলে থাকা অবস্থায় হৃদয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হৃদয়ের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এলাকায়। তার বাবার নাম লিটন মিয়া ও মায়ের নাম হাসিনা বেগম। তিনি শহরতলির শাহীবাগ আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।