সিলেটে মাঠের রাজনীতিতে চাঙ্গা বিএনপি।

- আপডেট সময়ঃ ০৪:১৫:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
- / ৮৫ বার পড়া হয়েছে।

দীর্ঘদিন পর গত সোমবার সিলেটের রাজপথে বিশাল শোডাউন দিয়েছে ছাত্রদল। এতে অংশ নিয়েছিলেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি হিসেবে সিলেটে ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছিল। আর এতে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। গতকালও সিলেট ছিল মিছিলের নগরী। আয়োজন করেছিল স্বেচ্ছাসেবক দল। এতে নেতাকর্মীদের ঢল উপচে পড়ে। পরপর দুটি শোডাউনেই শেষ হচ্ছে না মাঠের রাজনীতির দৃশ্যপট। প্রস্তুতি নিচ্ছে যুবদলও। সিলেট যুবদল নেতারা জানিয়েছেন- সিলেট যুবদল অতীতের চেয়ে অনেক বেশি চাঙ্গা। দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে সিলেট যুবদল প্রস্তুত রয়েছে। সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মুমিন মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সিলেটে শোডাউন করতে যুবদল প্রস্তুতি নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেটের রাজপথ যুবদলের দখলে রাখতে অন্তত ১০ থেকে ১২ হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। সিলেট যুবদলের সব ইউনিটের নেতারা এই কর্মসূচিতে শরিক হবেন বলে জানান তিনি। সিলেট বিএনপি’র তরফ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী ভোটের মাঠে কাজ করছেন। প্রায় অর্ধশতাধিক প্রার্থী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ছুটে চলেছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। এতে করে মাঠে-ময়দানে বিএনপি’র প্রচারণায় ভোটারদের মধ্যে সাড়া পড়েছে। তবে জেলা ও নগর বিএনপি’র তরফ থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ৩১ দফার প্রচারণা।
সিনিয়র নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত এ প্রচারণাপত্র নিয়ে জনগণের কাছাকাছি যাচ্ছেন। সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী মানবজমিনকে জানিয়েছেন- ৩১ দফা হচ্ছে দেশ সংস্কারের বড় মাধ্যম। এজন্য সিলেট বিএনপি’র নেতারা কখনো ঐক্যবদ্ধভাবে আবার কখনো নিজেদের উদ্যোগে এ প্রচারণা চালাচ্ছেন। যে যেদিকেই যাচ্ছেন সবার হাতে রয়েছে ৩১ দফার প্রচারণাপত্র। শুধু সিলেটের নেতারাই নয়, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন ৩১ দফা প্রচারণায়। এই প্রচারণাকে জোরালো করছেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। ইতিমধ্যে তার নেতৃত্বে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে দীর্ঘদিন পর বিশাল শোডাউন করা হয়েছে। আর এই শোডাউন ছিল ৩১ দফার প্রচারণাকে ঘিরে। তিনি আজ সিলেটের জৈন্তাপুরের ঐতিহাসিক বটতলায় একইভাবে প্রচারণা চালাবেন। এতে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন জৈন্তাপুর বিএনপি নেতারা। মিফতাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন- দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ক্ষমতায় এলে আগামীর কেমন বাংলাদেশ নির্মাণ করবেন সেটির প্রতিফলন হচ্ছে এই ৩১ দফা। সুতরাং এই দফাগুলো সিলেটের মানুষ মনেপ্রাণে গ্রহণ করছেন। আর যেদিকে আমরা দাওয়াত নিয়ে যাচ্ছি সেদিকেই মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সুতরাং বিএনপি’র প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ছে বলে জানান তিনি। গত শনিবার সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: আগামীর বাংলাদেশ ও তারেক রহমান’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম। গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে তার এই আয়োজন সিলেটে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ব্যারিস্টার সালাম জানিয়েছেন- কীভাবে একটি গণ-অভ্যুত্থানের পটভূমি রচনা হয়েছিল সেটি সবার জানা উচিত। এই গণ-অভ্যুত্থান এমনি এমনি হয়নি। এজন্য আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শ্রম-মেধা ও দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি দায়বোধের বহিঃপ্রকাশ থেকেই দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এদিকে সিলেটে ছুটে আসছেন কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারাও। গত সপ্তাহে সিলেট সফর করে গেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারা সিলেটে মাজার জিয়ারত ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনার দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ ছিল। এই সভার পর সিলেটে বড় ধরনের আয়োজন করেছিল নগর বিএনপি। নগর বিএনপি’র উদ্যোগে পিটিআই মিলনায়তনে সাংগঠনিক সভার আয়োজন করা হয়। এই সভায় দলের উপদেষ্টামণ্ডলী সিলেট অঞ্চলের নেতারা ছাড়া নগর বিএনপি’র সব ইউনিটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট বিভাগ বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ।
সিলেটের সকল অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেলেই তিনি অংশ নিচ্ছেন। তবে সিলেটের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোসহ দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সবচেয়ে বেশি সফর করছেন সাংগঠনিক নেতা ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি কেবল বিএনপি’র ডাকেই নয়, অঙ্গ-সংগঠনের ডাকে সিলেটে আসছেন। দলের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। সিলেট বিএনপি’র নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- সাংগঠনিকভাবে সিলেটে বিএনপি অনেক বেশি শক্তিশালী দল। দলের নেতারা সাংগঠনিকভাবে আরও বেশি কাজ করছেন। একইসঙ্গে মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে তারা জনসম্পৃক্ত কর্মসূচিতে বেশি বেশি যোগ দিচ্ছেন। তারা জানান- দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এখন সিলেটে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। চলমান সামাজিক সংকট মোকাবিলায় তারা জনগণের কাছাকাছি যাচ্ছেন। বিশেষ করে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে গতি বাড়াতে তারা প্রশাসনিকভাবে লিয়াজোঁ বাড়িয়েছেন। এতে করে সচল হচ্ছে সিলেটের উন্নয়নের চাকাও।