০৭:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫

বৃষ্টি ভেজা দিনে নিত্যধামে বিদায়, ইসকন সিলেট মন্দিরে শেষ শ্রদ্ধা

সিলেট ব্যুরো
  • আপডেট সময়ঃ ০৭:১১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / ২ বার পড়া হয়েছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢাকা। হালকা বৃষ্টির ছোঁয়ায় ভিজছে প্রকৃতি। এই বৃষ্টি ভেজা দিনে। ইসকনের নিবেদিত ব্রহ্মচারী দেবর্ষি শ্রীবাস দাস ব্রহ্মচারী-র শ্রদ্ধেয় পিতা অকিঞ্চন মধুসূদন দাস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে। দেহত্যাগকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। শেষ সময়ে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সিলেট ইসকন ভক্তসমাজে নেমে আসে শোকের ছায়া।

দেহত্যাগের পর তাঁর পবিত্র দেহ আনা হয় ইসকন সিলেট মন্দিরে, যেখানে শাস্ত্রীয় রীতি অনুসারে কীর্তন, স্নান ও বৈষ্ণব সম্মান প্রদান করা হয়। বৃষ্টিস্নাত বাতাসের মাঝে কীর্তনের ধ্বনি যেন আকাশকেও ভিজিয়ে দেয়। উপস্থিত ছিলেন শতাধিক ভক্ত ও মন্দিরের দায়িত্বশীলরা।

এই সময় ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেট মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ এক গভীর ও অনুপ্রেরণামূলক বার্তায় বলেন- “দেহত্যাগ একটি যাত্রার সমাপ্তি নয়, বরং আত্মার শুদ্ধ গন্তব্যে যাত্রার শুরু। যাঁর সন্তান একজন ব্রহ্মচারী, যিনি পরমপিতা শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে নিবেদন করেছেন-সে পিতা অবশ্যই ভগবানের আশ্রয়ে স্থান পাবেন।এই পরিবার আমাদের শিখিয়েছে, ভক্তি মানে শুধু ভগবানের সেবা নয়, ভক্তি মানে সম্পর্ক, কর্তব্য ও ভালোবাসা।”

মহারাজ আরও বলেন-“এই বৃষ্টি যেন তাঁর বিদায়ের অশ্রুজল হয়ে এসেছে। আজকের এই পরিবেশ প্রকৃতির কণ্ঠেও যেন কীর্তনের সুর।”

দেবর্ষি শ্রীবাস দাস ব্রহ্মচারী নিজ হাতে বাবাকে স্নান করান, মুখে তুলসী ও গঙ্গাজল প্রদান করেন। এ সময় আমেরিকা থেকে ছুটে আসা ছোট ভাইও উপস্থিত ছিলেন, তবে বাবাকে জীবিত আর দেখতে পাননি। দুই ভাইয়ের অশ্রুসিক্ত বিদায় যেন ভক্তি ও সন্তানের কর্তব্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

পরে মরদেহ নেওয়া হয় পৈত্রিক গ্রাম সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলায়, যেখানে সম্পন্ন হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।

ইসকন সিলেট মন্দিরের পক্ষ থেকে আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেন তাঁকে নিত্যধামে শাশ্বত আশ্রয় প্রদান করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বৃষ্টি ভেজা দিনে নিত্যধামে বিদায়, ইসকন সিলেট মন্দিরে শেষ শ্রদ্ধা

আপডেট সময়ঃ ০৭:১১:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢাকা। হালকা বৃষ্টির ছোঁয়ায় ভিজছে প্রকৃতি। এই বৃষ্টি ভেজা দিনে। ইসকনের নিবেদিত ব্রহ্মচারী দেবর্ষি শ্রীবাস দাস ব্রহ্মচারী-র শ্রদ্ধেয় পিতা অকিঞ্চন মধুসূদন দাস শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে। দেহত্যাগকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। শেষ সময়ে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সিলেট ইসকন ভক্তসমাজে নেমে আসে শোকের ছায়া।

দেহত্যাগের পর তাঁর পবিত্র দেহ আনা হয় ইসকন সিলেট মন্দিরে, যেখানে শাস্ত্রীয় রীতি অনুসারে কীর্তন, স্নান ও বৈষ্ণব সম্মান প্রদান করা হয়। বৃষ্টিস্নাত বাতাসের মাঝে কীর্তনের ধ্বনি যেন আকাশকেও ভিজিয়ে দেয়। উপস্থিত ছিলেন শতাধিক ভক্ত ও মন্দিরের দায়িত্বশীলরা।

এই সময় ইসকন বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও ইসকন সিলেট মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ এক গভীর ও অনুপ্রেরণামূলক বার্তায় বলেন- “দেহত্যাগ একটি যাত্রার সমাপ্তি নয়, বরং আত্মার শুদ্ধ গন্তব্যে যাত্রার শুরু। যাঁর সন্তান একজন ব্রহ্মচারী, যিনি পরমপিতা শ্রীকৃষ্ণের সেবায় নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে নিবেদন করেছেন-সে পিতা অবশ্যই ভগবানের আশ্রয়ে স্থান পাবেন।এই পরিবার আমাদের শিখিয়েছে, ভক্তি মানে শুধু ভগবানের সেবা নয়, ভক্তি মানে সম্পর্ক, কর্তব্য ও ভালোবাসা।”

মহারাজ আরও বলেন-“এই বৃষ্টি যেন তাঁর বিদায়ের অশ্রুজল হয়ে এসেছে। আজকের এই পরিবেশ প্রকৃতির কণ্ঠেও যেন কীর্তনের সুর।”

দেবর্ষি শ্রীবাস দাস ব্রহ্মচারী নিজ হাতে বাবাকে স্নান করান, মুখে তুলসী ও গঙ্গাজল প্রদান করেন। এ সময় আমেরিকা থেকে ছুটে আসা ছোট ভাইও উপস্থিত ছিলেন, তবে বাবাকে জীবিত আর দেখতে পাননি। দুই ভাইয়ের অশ্রুসিক্ত বিদায় যেন ভক্তি ও সন্তানের কর্তব্যের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

পরে মরদেহ নেওয়া হয় পৈত্রিক গ্রাম সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলায়, যেখানে সম্পন্ন হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।

ইসকন সিলেট মন্দিরের পক্ষ থেকে আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেন তাঁকে নিত্যধামে শাশ্বত আশ্রয় প্রদান করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন