১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাওয়ার পরে বিশেষ দোয়া, সব গুনাহ মাফের কারণ

ইসলাম ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৫:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে।

ইসলামে দোয়া একটি মহান ইবাদত। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং গুনাহ মাফ করিয়ে নেয়ার জন্য দোয়ার বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে- ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো, আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব। যারা অহংকারবশত আমার ইবাদত থেকে বিমুখ হয়, তারা অবশ্যই লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন: ৬০)

খাওয়ার পর একটি বিশেষ দোয়ার কথা রয়েছে হাদিসে, যা পাঠ করলে মহান আল্লাহ পূর্ববর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেন।

খাওয়ার পর বিশেষ দোয়া
খাওয়ার পর এক বিশেষ দোয়ার কথা হাদিসে এসেছে, যা পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা বান্দার গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
দোয়াটি হলো—
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَطْعَمَنِي هَذَا الطَّعَامَ وَرَزَقَنِيهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّي وَلَا قُوَّةٍ

উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আত‘আমানি হাজাত্‌তা‘আমা ওয়া রাযাকানিহি মিন গাইরি হাউলিম মিন্নি ওয়া লা কুওয়্যাহ।

অর্থ: ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমাকে এই খাবার খাইয়েছেন এবং এটি আমার রিজিক করেছেন— আমার কোনো ক্ষমতা বা শক্তি ছাড়াই।’ (তিরমিজি: ৩৪৫৮)

হাদিসের বর্ণনা ও ফজিলত
সাহল ইবনে মুআজ (রা.) থেকে তাঁর পিতা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন— ‘যে ব্যক্তি খাবার খাওয়ার পর এই দোয়া পড়ে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৪৫৮)

এই দোয়ার প্রভাব ও শর্তাবলী
১. ছোট গুনাহ মাফ: হাদিসে উল্লেখিত গুনাহ মাফ বলতে মূলত ছোট গুনাহ বোঝানো হয়েছে। বড় গুনাহ (কবিরা) থেকে মুক্তির জন্য সত্যিকারের তওবা জরুরি।
২. হালাল খাদ্য গ্রহণের গুরুত্ব: দোয়ার প্রভাব পেতে হলে খাবারটি হালাল হতে হবে। হারাম রিজিক গ্রহণ করে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করলে গুনাহ মাফের আশা করা যায় না।
৩. আন্তরিকতা ও উপলব্ধি: এই দোয়া পড়তে হবে আন্তরিকতার সাথে। মনে রাখতে হবে, রিজিক একমাত্র আল্লাহর দান; বান্দার কোনো শক্তি বা অধিকার এতে নেই।
৪. ফরজ ইবাদতের বিকল্প নয়: এই ছোট দোয়া কখনোই ফরজ ইবাদতের বিকল্প নয়। কেবল এই দোয়ার ওপর নির্ভর করে গুনাহ মাফের আশা করা উচিত নয়।

রাসুল (স.)-এর আরেক দোয়া
সহিহ বুখারিতে একটি দোয়া এসেছে, যা রাসুলুল্লাহ (স.) খাবার শেষে পড়তেন। দোয়াটি হলো-
الْحَمْدُ للهِ كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ، غَيْرَ مَكْفِيٍّ، وَلَا مُوَدَّعٍ، وَلَا مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাসিরান তাইয়্যিবান মুবারাকান ফিহি, গাইরা মাকফিইইন, ওয়ালা মুয়াদ্দাঈন, ওয়ালা মুস্তাগনান আনহু রাব্বানা।

অর্থ: ‘অনেক পবিত্র ও বরকতময় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। হে আমাদের রব! আমরা এর থেকে মুক্ত, পরিপূর্ণ কিংবা বেপরোয়া হতে পারি না।’ (সহিহ বুখারি: ৫৪৫৮)

খাবার শেষে এই ছোট্ট অথচ মহৎ দোয়াগুলো আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এগুলো দুনিয়ার বরকত ও আত্মার প্রশান্তির উপায়। তবে মনে রাখতে হবে—এই দোয়াগুলোর প্রকৃত উপকারিতা পেতে হলে আমাদের জীবনের অন্যান্য ইবাদতও সঠিকভাবে আদায় করতে হবে। আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, হালাল রিজিক গ্রহণ, নিয়মিত নামাজ, খাঁটি তওবা—এই সবকিছু মিলেই বান্দাকে পরিপূর্ণ মুসলিম ও ক্ষমার উপযুক্ত করে তোলে।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই আমলগুলো নিয়মিত করার তাওফিক দিন এবং আমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন
ট্যাগসঃ

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন